আফগানিস্তানের জয়ে প্রাণ ফিরেছিল বিশ্বকাপে। তাদের জয় তথাকথিত আর এক ছোট দল নেদারল্যান্ডসকেও প্রেরণা জুগিয়েছিল। প্রশ্ন ছিল, সত্যিই কি এমন কিছু হবে? দক্ষিণ আফ্রিকা বিধ্বংসী ফর্মে। প্রথম দু-ম্যাচে তাদের ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং নজরকাড়া। তাদের হারানো এত সহজ নয়। কিন্তু এই বিশ্বকাপ অঘটন দেখে ফেলেছে। আরও একটা অঘটনও দেখল। ধরমশালায় দক্ষিণ আফ্রিকাকে বিশাল ব্যবধানে হারাল নেদারল্যান্ডস। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও প্রোটিয়াদের হারিয়েছিল। ওয়ান ডে বিশ্বকাপের মঞ্চে এই প্রথম কোনও টেস্ট খেলিয়ে দেশকে হারাল নেদারল্যান্ডস।
গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মিলারের একটা অনবদ্য ক্যাচ নিয়েছিলেন রোলেফ ভ্যান ডার মারওয়ে। নেদারল্যান্ডস হারিয়ে দিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকাকে। শুধু তাই নয়, গ্রুপ পর্বেই প্রোটিয়াদের ছিটকে দিয়েছিল ডাচরা। এ দিন রোলেফ ভ্যান ডার মারওয়ের বোলিংয়ে মিলারের ক্যাচ ওঠে। মিলার সে সময় ২৩ রানে। বাউন্ডারি লাইনে পজিশনে বাস ডি লিড। যদিও ক্যাচ ফসকে বাউন্ডারি। মনে হচ্ছিল, এটাই না টার্নিং পয়েন্ট হয়ে দাঁড়ায়! দুর্দান্ত একটা ইনিংসে ম্যাচ নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলেন মিলার। তাঁকে ক্লিন বোল্ড করে নেদারল্যান্ডসকে ম্যাচে ফেরান লোগান ভ্যান বিক। ৪৩ রানে ফেরেন কিলার মিলার। সেখান থেকেই ম্যাচের রাশ পুরোপুরি নেদারল্যান্ডসের হাতে।
কাগিসো রাবাডা-কেশব মহারাজ জুটি হারের ব্যবধান কমানোর মরিয়া চেষ্টা করে। যদিও জুটি দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। রাবাডাকে ফেরান বাস ডি লিড। কেশব মহারাজ দীর্ঘ সময় ক্রিজে পড়ে থাকেন। লুঙ্গি এনগিডি নাইট ওয়াচম্যানের ভূমিকায়। যেন টেস্ট ম্যাচ চলছে। অলআউট হওয়া যাবে না। নেদারল্যান্ডস খুঁজছিল একটা উইকেট। দক্ষিণ আফ্রিকার মতো প্রতিপক্ষকে অলআউট করে জয়ের আনন্দই আলাদা। এক বল বাকি থাকতে ২০৭ রানে অলআউট দক্ষিণ আফ্রিকা। ৩৮ রানে জয় ডাচদের।
বৃষ্টির কারণে দেরিতে শুরু হয় ম্যাচ। ওভারও কমে। ৪৩ ওভারের ম্যাচ হয়। টস জিতে রান তাড়ার সিদ্ধান্ত নেন প্রোটিয়া অধিনায়ক তেম্বা বাভুমা। নেদারল্যান্ডসের লক্ষ্য ছিল একটা বড় স্কোর গড়তে হবে। তবে কাগিসো রাবাডা, লুনগি এনগিডি, জেরাল্ড কোৎজে, মার্কো জানসেনের মতো পেস বোলিং আক্রমণের সামনে বড় স্কোর সহজ নয়। ক্যাপ্টেন্স নক খেলেন স্কট এডওয়ার্ড। রোলেফ ভ্যান ডার মারওয়ে এবং আর্য দত্তর ক্যামিও ইনিংস। স্লগ ওভারে ঝড় তোলে নেদারল্যান্ডস। ব্যাটিংয়ের মতো বোলিংয়ে ভরসা দেন রোলেফ ভ্যান ডার। জোড়া উইকেট তাঁর ঝুলিতে। দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্ম, সে দেশের হয়ে খেলেছেনও। সেই রোলেফ ভ্যান ডার মারওয়েই দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে জয়ে মূল কারিগর হয়ে উঠলেন।