অপরাধীদের দশ আঙুলের ছাপ নিয়ে অনেকটা আধার কার্ডের মতো তথ্যপঞ্জি বা ‘ক্রিমিনাল আইডি’ তৈরি করতে চাইছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। যার পোশাকি নাম ‘ন্যাশনাল অটোমেটেড ফিঙ্গারপ্রিন্ট সিস্টেমস’ বা এনএএফএস। এ বার কেন্দ্রীয় ওই প্রকল্পে যুক্ত হতে চলেছে কলকাতা পুলিশও। এতদিন পর্যন্ত কলকাতা পুলিশের থানাগুলি ‘ক্রিমিনাল রেকর্ড সিসটেম’ বা সিআরএস-এর অধীনে অপরাধীদের হাতের আঙুলের ছাপ এবং চোখের রেটিনার ছবি তুলে লালবাজারে পাঠাত। এ বার কেন্দ্রীয় প্রকল্পেও যুক্ত হল এই ‘এনএএফএস’। লালবাজার সূত্রে খবর, কোনও অপরাধী ধরা পড়লে তার হাতের দশ আঙুলের ছাপ নেওয়ার পর ১০ ডিজিটের একটি ন্যাশনাল ফিঙ্গারপ্রিন্ট নম্বর জেনারেট হবে।যাকে পুলিশি পরিভাষা বা বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় বলা হয় এনএফএন। এরপর ওই অপরাধীর যতদিন না মৃত্যু হচ্ছে ততদিন ওই অপরাধীর বিরুদ্ধে যতগুলি মামলা হবে, তার যাবতীয় তথ্য মজুত থাকবে দশ ডিজিটের ওই নম্বরে। এরপর ওই অপরাধী যে রাজ্যেই গ্রেপ্তার হোক না কেন, এনএফএন নম্বর দিলেই ওই ব্যক্তির ক্ষেত্রে থাকা সব তথ্য সহজেরই পেয়ে যাবেন তদন্তকারী আধিকারিকেরা। ফলে যাঁরা অপরাধের পর ভেক পাল্টাতে পটু সেই সব অপরাধীরাও ধরা পড়ে যাবে অতি সহজেই, বলে ধারনা কলকাতা পুলিশকর্তাদের।
পাশাপাশি কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই কলকাতা পুলিশের বিভিন্ন থানার ওসিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কোনও দাগি অপরাধী গ্রেপ্তার হলে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টার মধ্যে তার আঙুলের ছাপ তুলে পাঠাতে হবে এনএএফএস-এ। প্রসঙ্গত, জাতীয় নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই এনএএফএস প্রকল্পের সূচনা হয় গত বছর। দিল্লিতে ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্ট্রাটেজিস বা এএসএস কনফারেন্সে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। মধ্যপ্রদেশ পুলিশ সবচেয়ে আগে এই প্রকল্পে যুক্ত হয়। ভারতের প্রায় ১৬ হাজার থানা এমনিতেই ‘ক্রাইম অ্যান্ড ক্রিমিনাল ট্রাকিং নেটওয়ার্ক সিস্টেমস বা সিসিটিএনএস-এর আওতায় রয়েছে। যার ফলে অপরাধীদের বিষয়ে তথ্য কেন্দ্রীয় ভাবে পুলিশকর্মীরা পানও। এরপরও কোথাও যেন ফাঁক থেকেই যাচ্ছিল। সেই কারণেই সিসিটিএনএস-এর পাশাপাশি এনএএফএস প্রজেক্টকে গুরুত্ব দেওয়া হয় কেন্দ্রের তরফ থেকে। জানানো হয়, সব রাজ্যকেই ধীরে ধীরে এই প্রকল্পে যুক্ত করা হবে।