ভিন রাজ্যে পড়তে গিয়ে কলকাতার এক পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা সামনে এল। পড়ুয়ার পরিবারের অভিযোগ তাঁদের মেয়েকে খুন করা হয়েছে। নিট পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতেই মেয়েকে ভিন রাজ্যে পাঠিয়েছিল পরিবার। প্রস্তুতি চলছিল অন্ধ্র প্রদেশের একটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। কলকাতার নামী ইংরাজি মাধ্যম স্কুল থেকে পাশ করা এই কিশোরীর নাম রীতি সাহা। বয়স মাত্র ১৬। সূত্রের খবর, গত ১৪ জুলাই রীতির বাবাকে ফোন করে এই প্রতিষ্ঠান থেকে জানানো হয় মেয়ে চার তলার ছাদ থেকে পড়ে গিয়েছে। এদিকে ফোনে হোস্টেলের ওয়ার্ডেন জানান ছাদ নয়, সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়েছে। খবর পেয়েই পরের দিন সকালে বাবা-মা আর দিদি দৌড়ান ভাইজ্যাকে।
সেখানে পৌঁছে তাঁরা দেখেন প্রায় বিনা চিকিৎসায় পড়ে রয়েছে রীতি। সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা মেয়েকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যান তাঁরা। কিন্তু, ততক্ষণে অনেক দেরি হতে গিয়েছে। শেষ রক্ষা আর হয়নি। ১৬ তারিখ দুপুরেই মেয়ে মৃত্যু হয় রীতির। পরিবার জানাচ্ছে, মেয়ে পড়ে যাওয়ার খবর পেয়ে ভাইজ্যাকে তাঁদের পরিচিতরা হাসপাতালে গিয়েছিলেন। ভিডিয়ো কল করেও মেয়েকে দেখিয়েছিলেন। পরিবারের দাবি, রীতির তখনও জ্ঞান ছিল, আস্তে আস্তে কথাও বলছিল। অভিযোগ তখন পুলিশ এসে তার কোনও বয়ান রেকর্ড করেনি। কিন্তু মেয়ে অচৈতন্য অবস্থায় চলে যাওয়ার পরেই ঘটনাটিকে আত্মহত্যা করে চালাতে সচেষ্ট হয় পুলিশ, অভিযোগ পরিবারের। পুলিশের এই আচরণ দেখে স্তম্ভিত হয়ে যায় রীতির পরিবারের সদস্যরা।
মেয়ের শেষকৃত্য শেষেই সোজা দ্বারস্থ হন কর্নাটক হাইকোর্টে। শেষ পর্যন্ত কোর্ট অর্ডারেই শুরু হয়েছ তদন্ত। বিচার ব্যাবস্থার উপর আস্থা থাকলেও পরিবারের আশঙ্কা ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সব তথ্য লোপাটের চেষ্টা করবে। ঘটনায় রীতির বাবা সুখদেব সাহা বলছেন, ভিডিও কলে আহত অবস্থায় যখন দেখি তাতে স্পষ্ট দেখি ও নড়াচড়া করছে। জল চাইছে। সেই রেকর্ডিংও আমার কাছে আছে। কিন্তু, ওর জ্ঞান থাকা অবস্থাতেও কেউ কোনও স্টেটমেন্ট নেয়নি। কথা বলেনি পুলিশ। যে কথা বলতে পারছে ডাক্তার তো প্রথমেই তাঁর কাছ থেকে জানতে চাইবে তাঁর কী হয়েছিল। ও যে হস্টেলে থাকত সেখান থেকে থানা একদম কাছেই। কিন্তু, ঘটনা জানার পরেও পুলিশ শুরুতে আসেনি। দু’দিন ও বেঁচে থাকা কালীন কোনও বয়ান নেওয়া হয়নি। এতেই তো আমাদের খুনের সন্দেহটা আরও পাকাপোক্ত হয়ে যাচ্ছে।