সোমবার মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘিতে উপনির্বাচন

সোমবার মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি বিধানসভার উপনির্বাচন। ভোটের প্রস্তুতি তুঙ্গে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, সাগরদিঘিতে মোট বুথ ২৪৬টি। এই বুথগুলিকে ২২টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি সেক্টরে থাকছে ক্যুইক রেসপন্স টিম।শুধু তাই নয়, প্রত্যেক বুথেই থাকছে ক্যামেরা। পাশাপাশি ওয়েব কাস্টিংয়ের মাধ্যমেও চলবে প্রতিটি বুথে চালানো হবে নজরদারি। একইসঙ্গে এই উপনর্বাচনকে কেন্দ্র করে মোতায়েন করা হয়েছে ৩০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। কারণ, শান্তিপূর্ণ ভোট করানোই কমিশনের সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ।নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, সাগরদিঘি নির্বাচনে লড়াইয়ে সামিল তৃণমূল, কংগ্রেস ও বিজেপি। প্রচারে ঝড় তুলেছে সব দলই। সোমবার সাগরদিঘিতে ২ লাখ ৪৬ হাজার ৯৬ জন ভোটার তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ১ লাখ ২৪ হাজার ৬৬৪ জন। মহিলা ভোটার ১ লাখ ২১ হাজার ৪২৭ জন। ৫ জন উভয়লিঙ্গের ভোটার।

এদিকে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করানোর নির্বাচন কমিশনের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সাগরদিঘিতে এবার ত্রিমুখী লড়াই দেখার দিকেই তাকিয়ে রয়েছে রাজনৈতিক মহল। তৃণমূলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মুখ্যমন্তী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আত্মীয় দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপির টিকিটে লড়ছেন দিলীপ সাহা। অন্যদিকে বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী হিসেবে ভোটে লড়বেন বাইরন বিশ্বাস।

প্রসঙ্গত, সাগরদিঘি বিধানসভা উপনির্বাচনের ৩ দিন আগে ওসিকে সরায় নির্বাচন কমিশন। ভোটের মুখে সাগরদিঘির নতুন ওসির দায়িত্বে এলেন নিমাই ঘোষ।নিমাই ঘোষ আগে ছিলেন হাওড়া কমিশনারেটে। সূত্রে খবর, ওসি অভিজিৎ সরকারকে জঙ্গিপুর পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে। একইসঙ্গে কমিশনের কড়া নির্দেশ, সাগরদিঘি বিধানসভা উপনির্বাচনের কোনও কাজে যুক্ত থাকতে পারবেন না অভিজিৎ সরকার।

সূত্রে খবর, ওসি অভিজিৎ সরকারের বিরুদ্ধে অনেক দিন ধরেই বিরোধীদের অভিযোগের পাহাড় জমছিল।শাসকদল তৃণমূলের হয়ে পক্ষপাতদুষ্ট হিসেবে কাজ করা বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো, অভিজিৎ সরকারের বিরুদ্ধে এমন একাধিক অভিযোগে সরব হয় বিরোধী শিবির।সম্প্রতি প্রতারণা ও ধর্ষণের অভিযোগে সাগরদিঘির প্রাক্তন যুব কংগ্রেস সভাপতি সাইদুর রহমানের গ্রেপ্তারির ঘটনায় এই অভিযোগ আরও তীব্র হয়। কংগ্রেসের তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়, ভোটের আগে রাজনৈতিকভাবে চাপে ফেলতেই গ্রেপ্তার করা হয় সাইদুরকে। এই অভিযোগ তুলে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থও হয় কংগ্রেস। এরপরই হাই কোর্টে প্রশ্নের মুখে পড়ে সাগরদিঘি থানার পুলিশের ভূমিকা। ১৫ বছর আগের ঘটনায় কেন প্রাথমিক তদন্ত করা হল না তা নিয়েও ওঠে প্রশ্ন।  প্রশ্ন ওঠে, ১৫ বছর আগের ঘটনায় কেন ২০২৩-এ অভিযোগ করা হল তা নিয়েও। এরপরই ওসিকে কেস ডায়েরি-সহ আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। এই মামলায় ধৃত যুব কংগ্রেস নেতা অন্তর্বর্তী জামিন পান।এরই প্রেক্ষিতে সাগরদিঘি থানার ওসি অভিজিৎ সরকারের অপসারণ চেয়ে আগেই নির্বাচন কমিশনে চিঠি লেখেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। একইসঙ্গে ওসি অভিজিৎ সরকারকে সাসপেন্ড করার দাবি জানান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। শেষ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে অপসারিত হন ওসি অভিজিৎ সরকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

10 − 3 =