নিজস্ব প্রতিবেদন, দৌলতাবাদ: আর্থিক অনটনকে দূর করে দারিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করেই ডব্লিউবিসিএস একজিকিউটিভে সফল হয়ে চমক দিলেন মুর্শিদাবাদের দৌলতাবাদের মেয়ে রোকাইয়া সুলতানা। প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকা থেকে বিডিও পদে বসতে চলেছেন তিনি। সম্প্রতি প্রকাশিত ডব্লিউবিসিএসের ফলাফলে জেনারেল ক্যাটাগরিতে ২৭তম স্থান অধিকার করেছেন রোকাইয়া সুলতানা। গ্রামের মেয়ের এহেন সাফল্যে গর্বিত দৌলতাবাদের বাসিন্দারা। সোমবার এলাকার মুখ উজ্জ্বলকারী রোকাইয়া সুলতানাকে সংবর্ধনা প্রদান করেন দৌলতাবাদ থানার পুলিশ।
জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদের দৌলতাবাদের রুহিয়া গ্রামের রুহুল হোসেন ও আরজুমা খাতুনের মেয়ে রোকাইয়া সুলতানা। বাবা পেশায় একজন চাষি। মা পার্শ্বশিক্ষিকা। অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের মেয়ে রোকাইয়া সুলতানা স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। পঞ্চম থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত বহরমপুরে মহারানি কাশিশ্বরী গালর্স হাইßুñলে পড়াশোনা করেছেন। তারপরেই বহরমপুর কে এন কলেজ থেকে কেমিস্ট্রি অনার্স নিয়ে স্নাতক ও কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।
পড়াশোনা সম্পন্ন করেই শুরু হয় ডব্লিউবিসিএসের প্রস্তুতি। প্রথমে পাঁচ মাস বহরমপুরের একটি কোচিং সেন্টারে প্রস্তুতি নিলেও, কোভিডের কারণে সেটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শুরু বাড়িতেই পড়াশোনা। এরই মধ্যে বিয়েও হয় রোকাইয়া সুলতানার। কিন্তু চলতে থাকে ডব্লিউবিসিএসের প্রস্তুতি। প্রথম বছর কৃতকার্য হতে না পারলেও, হতাশ হননি। ফের জোর প্রস্ততি নিয়ে ২০২১ সালে ডব্লিউবিসিএস দেন তিনি। তাতেই প্রিলি উত্তীর্ণ হন রোকাইয়া। তারপরই মেন পরীক্ষা। সেই পরীক্ষার সাফল্য আসে ২০২৩ সালে। চাষির ঘরের মেয়ে রোকাইয়া সুলতানার সাফল্য জানাজানি হতেই এলাকায় কার্যত আনন্দের বাতাবরণ সৃষ্টি হয়। আনন্দে চোখে জল পরিবারের সদস্যদের। খুব দ্রুত ট্রেনিং সম্পন্ন করে বিডিও পদে বসতে চলেছেন রোকাইয়া সুলতানা। রোকাইয়া সুলতানার সাফল্যে গর্বিত মুর্শিদাবাদ।
রোকাইয়া বলেন, ‘আত্মবিশ্বাস আর কঠোর পরিশ্রম করলেই সাফল্য হাতের মুঠোয় আসবে। সরকারি চেয়ারে বসে সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দেওয়ায় আমার লক্ষ্য।’ হতদরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা রোকাইয়া পথ দেখাচ্ছেন দৌলতাবাদবাসী।