আধার ভিত্তিক লেনদেনকে কাজে লাগিয়ে প্রতারণা মুঙ্গের গ্যাংয়ের

রাজ্য জুড়ে সক্রিয় এবার মুঙ্গের গ্যাং। তাদেরই দৌলতে আধার নির্ভর লেনদেন প্রথাকে কাজে লাগিয়ে গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও হয়ে যাচ্ছে টাকা। এমনই এক ঘটনা ঘটেছে বহরমপুরের অবসরপ্রাপ্ত এক শিক্ষকের ক্ষেত্রে। ওই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও প্রায় ১০ হাজার টাকা পরে যদিও তিনি সেই টাকা ফেরতও পেয়ে যান। কিন্তু প্রশ্ন এখানেই, আধার-প্যান লিঙ্ক নিয়ে যখন হইচই চলছে তখন এভাবে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা চুরির ক্ষেত্রে আদৌ কি কেন্দ্রীয় সরকার সুরক্ষা দিতে সক্ষম হচ্ছে কি না তা নিয়েই।

প্রসঙ্গত, মুর্শিদাবাদের বহরমপুরের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক কল্যাণকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় দশ হাজার টাকা উধাও হ‌য়ে যায়। শুধু তাই নয়, এরপর অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের মোবাইলে একটি মেসেজ আসে। সেই মেসেজের তলায় টাকার প্রাপকের নামের জায়গায় লেখা ছিল ‘কুণালকুমার-মুঙ্গের’! আর এখানেই ‘আধার এনেবলড পেমেন্ট সিস্টেম’ কারচুপির সঙ্গে নাম জড়িয়ে গিয়েছে মুঙ্গেরের।

জানা গিয়েছে, প্রথম দিন ১০ হাজার টাকা উধাও হ‌ওয়ার পর‌ই অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক কল্যাণকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে ব্যাঙ্কের তরফ থেকে জানানো হয়, অ্যাকাউন্ট দ্রুত ফ্রিজ করার জন্য। এর কয়েকদিন পর মেসেজ আসে যে কেউ বা কারা টাকা তোলার চেষ্টা করেছে কিন্তু সে টাকা তুলতে পারেনি। এদিকে অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার পাশাপাশি টাকা গায়েবের বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়েছিলেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। তাতেই টাকা ফেরত পাওয়া গিয়েছে বলে মনে করেন তিনি। তবে তাঁরই এক প্রতিবেশীর ছ’দফায় ১০ হাজার টাকা করে ৬০ হাজার টাকা খোওয়া গিয়েছে। ওই প্রতিবেশী মেসেজ দেখেননি। যখন দেখেন ততক্ষণে দেরি হয়ে গিয়েছে।

শিক্ষকের মতে আধার পোর্টালে বায়োমেট্রিক লক আনলক থাকার কারণেই বিপত্তি। সেটি যে আনলক হয়ে রয়েছে এবং তার জেরে প্রতারকেরা এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। আর এই ধরনের ঘটনা যে প্রতারকেরা ঘটাতে পারে তা প্রবীণ নাগরিকদের অনেকেরই অজানা। তার‌ই সুযোগ নিয়ে পেনশন অ্যাকাউন্ট থেকে উধা‌ও হয়ে যায় টাকা।

এই প্রসঙ্গে সাইবার বিশেষজ্ঞ সন্দীপ সেনগুপ্ত বলেন, ‘দলিল থেকে এই ফ্রডগুলো হচ্ছে। আঙুলের ছাপ তুলে নিচ্ছে। আর সেখান থেকে আধার কার্ডের যাবতীয় তথ্য পেয়ে যাচ্ছে।’  এই সাইবার ক্রাইম সম্পর্কে সাবধান রেছেন কলকাতা পুলিশের সাইবার ইন্সপেক্টর মহমুদ আসাদুল্লাহ খানও। তাঁর পরামর্শ, ‘মাই আধার নামে গুগল প্লে স্টোরে অ্যাপ রয়েছে। ওর ভিতরে ঢুকে আধার অথেন্টিকেসন করার পর বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেসন লক করা যেতে পারে।’

এদিকে এই প্রতারণার ঘটনা সামনে আসার পর প্রবীণের প্রশ্ন, সব কিছুতে আধার লিঙ্কের উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। আধার লিঙ্ক থেকে যদি টাকা মার যায় তাহলে নিরাপত্তা কোথায় দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × one =