ব্যারাকপুর: এবার মুকুল পুত্র শুভ্রাংশু রায়ের নিশানায় বীজপুর ও জগদ্দলের দুই বিধায়ক সুবোধ অধিকারী ও সোমনাথ শ্যাম। মঙ্গলবার কাঁচড়াপাড়ার বাবু ব্লকে রক্তদান শিবিরের মঞ্চ থেকে সাংসদ অর্জুন সিং-কে ফের আক্রমণ করেছিলেন দুই বিধায়ক সুবোধ অধিকারী ও সোমনাথ শ্যাম। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল বেরোনোর পর তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ নিয়েও তারা সরব হয়েছেন।
বুধবার কাঁচড়াপাড়ার বাড়িতে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে দলের দুই বিধায়কের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন বীজপুর কেন্দ্রের প্রাক্তন বিধায়ক তথা কাঁচড়াপাড়া পুরসভার উপ-পুরপ্রধান শুভ্রাংশু রায়। বীজপুরের বিধায়কের নাম না করে এদিন মুকুল পুত্র শুভ্রাংশু রায় বলেন, ‘যিনি বা যারা ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের পর তাণ্ডবের কথা বলছেন, তাঁরা তখন কোন দলে ছিলেন? আগে তাঁরা সেটা ভেবে দেখুন।’
শুভ্রাংশু চ্যালেঞ্জের সুরে বলেন, এখন যাঁরা তৃণমূলে এসেছেন, তখন তারাই বিজেপিতে থেকে তাণ্ডব করেছিলেন। প্রসঙ্গত, ক্রমাগত সাংসদ অর্জুন সিংকে আক্রমণ করে চলেছেন দলেরই দুই বিধায়ক। যদিও দলের নির্দেশ মেনে সাংসদ এখনও পর্যন্ত চুপ রয়েছেন। এ প্রসঙ্গে শুভ্রাংশু বলেন, ‘উচ্চ নেতৃত্বের নির্দেশে সাংসদ দলে যোগ দিয়েছেন। তাহলে তো মনে হচ্ছে উচ্চ নেতৃত্বকেই নিশানা করা হচ্ছে।’ তাঁর কথায়, আত্ম অহংকার বেড়ে গেলে অনেক সময় এই রকম হয়।
আগের তৃণমূল এবং ২০১৯ সালের পরের তৃণমূল নিয়ে অনেকেই পার্থক্যের কথা বলছেন। এপ্রসঙ্গে শুভ্রাংশু-র প্রতিক্রিয়া, সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম কিংবা কেশপুর যদি না হত, তাহলে মানুষ ২০১৯ চোখে দেখতেই পারতেন না। শুভ্রাংশু-র সংযোজন, মানুষ যাকে ভয় পায়। তাকেই তো নিশানা করে। সাংসদকে হয়তো ওরা ভয় পাচ্ছে। তাই ওনারা সাংসদকে নিশানা করছেন।
এদিন নাম না করেই জগদ্দলের বিধায়ককেও আক্রমন করেন মুকুল পুত্র শুভ্রাংশু রায়। তিনি বলেন, ‘বীজপুরে এসে যিনি বড় বড় কথা বলছেন। তিনি তো জগদ্দল বিধানসভা কেন্দ্রের পুরো এলাকা সম্বন্ধে জানেন না।’ তাঁর সাফ কথা, দল অনুমতি দিলে তিনি জগদ্দলে গিয়ে জগদ্দলের বিধায়ককে মোক্ষম জবাব দেবেন। পুরানো স্মৃতি রোমন্থন করে এদিন মুকুল পুত্র বলেন, ‘বাম জমানায় বীজপুরে সিপিএমের অত্যাচারে সমস্ত বুথে এজেন্ট দেওয়া যেত না। মাত্র ৬০ শতাংশ বুথে তারা এজেন্ট দিতে পারতেন। কিন্তু এখন যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারা সকলেই নব্য। বামআমলের যন্ত্রনা তারা তো বুঝবেন না। যদিও বীজপুরের দুই টাউন সভাপতি দলের দুর্দিনের সৈনিক।’ তবে সাংসদকে লাগাতার নিশানায় ক্ষুব্ধ মুকুল পুত্রের কথায়, নিজেদের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি একদম উচিত নয়। যারা জন্মলগ্ন থেকে তৃণমূল করছেন কিংবা যারা তৃণমূল করতে গিয়ে সিপিএমের হাতে মার খেয়েছেন।