কলকাতা: ‘দিনরাত খেলা, খেলা। পড়াশোনায় মন দাও।’ ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া ছেলেকে শাসনের পাশাপাশি ছেলের বন্ধুদেরও একটু বকাবকি করে বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন মা। আর তার পরিণতি! নিজের জীবনটাই শেষ করে দিলেন ইঞ্জিনিয়ারিং-এর পড়ুয়া সোহম বসু (২১)। ঘটনাটি ঘটেছে কসবায়।
জানা গিয়েছে, ক্রিকেট খেলতে বড়ই ভালবাসতেন সোহম। পাড়ার ছেলেদের সঙ্গে মাঝে মাঝেই খেলতেও যেতেন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া। শনিবার দুপুরেও বন্ধুরা খেলার জন্য ডাকতে এসেছিল। কিন্তু খেলতে যেতে দেননি মা। বলেছিলেন, ‘খেলা নয়, পড়ায় মন দাও’। সেই অভিমানে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হলেন সোহম বসু। বেসরকারি কলেজে ইলেকট্রনিকস কমার্শিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া। মাঝেমধ্যেই পাড়ার বন্ধুদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলতেন। শনিবার দুপুর বারোটা নাগাদ সোহমকে খেলতে যাওয়ার জন্য ডাকতে এসেছিলেন দুই বন্ধু। কিন্তু সোহমের মা তাদের বকাবাকি করে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। খেলতে যাওয়ার জন্য ছেলেকেও বকাবকি করেছিলেন। তার পর বিশেষ কাজে সোহমের বাবা-মা দু’ জনবাড়ি ফিরে দেখেন সিলিং থেকে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলছে ছেলে। সঙ্গে সঙ্গে সোহমকে উদ্ধার করে ঢাকুরিয়ার এক বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। তাঁরা জানান, গলায় ফাঁস লেগে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। এর পর পুলিশে খবর যায়।প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ধারণা, মায়ের বকাবকির জন্যই এই ঘটনা।
কিন্তু মা তো শাসন করতেই পারেন? বকাবকির জন্য জীবনটাকেই শেষ করে দিতে হবে?
মনোবিদরা বলছেন, আজকের প্রজন্মের ওপর চাপ বাড়ছে। বাবা-মায়ের বাড়তে থাকা প্রত্যাশার চাপের সঙ্গে অনেক সময়েই পাল্লা দিতে পারেন না তাঁরা। নিজেদের ভালোলাগা, বন্ধুবান্ধব বাদ দিয়ে বইমুখো হতে হচ্ছে তাদের। ফলে মনের ওপর চাপ বাড়ছে। আর তাই অনেকসময় বাবা-মায়ের শাসনকে স্বাভাবিকভাবে নিতে পারছেন না তাঁরা।