করিমপুর: শনিবার সকাল ১০:৩০ নাগাদ কৃষ্ণনগর করিমপুর রাজ্য সড়কের ওপরে নাজিরপুর পেট্রোল পাম্পের কাছে মোটরবাইক ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে গুরুতর জখম হন তিন বছরের শিশু পুত্র-সহ এক দম্পতি। গুরুতর আহত তিনজনকেই নাজিরপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কামাল মণ্ডল (২৮) ও মৌসুমী বিবি খাতুনকে (২৪) মৃত বলে ঘোষণা করে কর্তব্যরতর চিকিৎসক। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তিন বছরের শিশু তানিশ মণ্ডলকে প্রথমে তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নাজিরপুর বাসস্ট্যান্ডের কাছে একটি সংস্থার তেল পাম্পের উল্টো দিকে দুর্ঘটনাটি ঘটে। কৃষ্ণনগর থেকে করিমপুরের দিকে যাচ্ছিল দুটি ট্রাক, অন্যদিকে করিমপুর থেকে কৃষ্ণনগরের দিকে আসছিলেন কামাল মণ্ডল সহ তিনজন। দুটি ট্রাক রেষারেষি করে ওভারটেক করতে গেলে দুটি ট্রাক পাশাপাশি এসে দাঁড়ায়। মোটরসাইকেল চালক কামাল মণ্ডল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাশের একটি গাছে ধাক্কা মারে। তিন বাইক আরোহীর কারোর হেলমেট না থাকায় প্রত্যেকের মাথায় চোট পান। তবে শিশুটি মায়ের কোল থেকে ছিটকে মাটিতে পড়ায় তার আঘাত অপেক্ষাকৃত কম গুরুতর ছিল।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, নাজিরপুর বাজারে এক চাঁদসি চিকিৎসকের কাছে শিশুটির চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাচ্ছিলেন মা ও বাবা। সকাল সাড়ে নটা নাগাদ করিমপুর থানার অন্তর্গত রহমতপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার গোয়াশ গ্রাম থেকে ডাক্তারখানার উদ্দেশ্যে বেরিয়েছিল তারা। মৃত কামালের বাবা আক্কাস মণ্ডল জানান, সকালবেলা খাওয়া দাওয়া করে বউমা ছেলে নাতিকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে ডাক্তার দেখাবো বলে বেরিয়ে গেল, ‘১০:৪০ নাগাদ নাজিরপুর থেকে একজন ফোন করে বলে কামাল আর বেঁচে নেই।’ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্বপন সাহা জানান, ‘তেল পাম্পের সামনে চায়ের দোকানে বসে চা খাচ্ছিলাম, হঠাৎ একটা জোরালো শধ ছুটে গিয়ে দেখি গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে মোটরসাইকেল পড়ে রয়েছে। আর পাশে পড়ে রয়েছে একটা লোক ও একটা বউ তাদের একটি বাচ্চা। দেখেই বুঝতে পারি যে মা-বাবা কেউ বেঁচে নেই, বাচ্চাটি তখন ছটফট করছিল। তাকে কোলে করে ছুটে হাসপাতালে নিয়ে যায়।’ ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় নাজিরপুর তদন্ত কেন্দ্রের আধিকারিক। ঘাতক লরিটিকে আটক করা হয়েছে, পলাতক চালক। দেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।