বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু মা-মেয়ের, একবালপুরের ঘটনা বুঝিয়ে দিল সতর্ক নয় সিইএসসি

খোদ কলকাতার বুকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট তিন। ভিজে কাপড় পাঁচিলে মেলতে গিয়েছিলেন জামাই। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হতে দেখে, তাঁকে বাঁচাতে যান শাশুড়ি, আর মাকে তারে ঝুলতে দেখে বাঁচাতে যান মেয়েও। আর তাতেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একই সঙ্গে মৃত্যু হল মা ও মেয়ের। জামাইয়ের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
রবিবার সকালে এমনই ঘটনা ঘটে গেল একবালপুরের ৩৭/২ডি একবালপুরের লেনে। একবালপুর পুলিশ সূত্রে খবর, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এদিন যাঁদের মৃত্যু হয় তাঁদের নাম মুনতাহা বেগম ও খাইরুলন্নেসা। মুনতাহা বেগমের বয়স ৬৪ এবং মেয়ে খাইরুলন্নেসার বয়স ৪২। পাশাপাশি একবালপুর পুলিশ সূত্রে এও জানানো হয়েছে, একবালপুরের লেনে যে এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে, সেটি মূলত বস্তি ঘিঞ্জি এলাকা। সেখানকার বাসিন্দারা মূলত রাস্তার সামনেই দড়ি খাটিয়ে জামা কাপড় শুকোতে দেন। ছুটির সকালে সেইভাবেই তাঁরা জামকাপড় মেলতে গিয়েছিলেন। এদিন প্রথমে কাপড় মেলতে যান ইজহার আখতার। হাইভোল্টেজ বিদ্যুতের তারে হাত দিতেই আটকে যায় শরীর। কিছু না ভেবেই তাঁকে বাঁচাতে গিয়েছিলেন শাশুড়ি মুনতাহা বেগম। তিনিও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। আর মায়ের মুখ দিয়ে গ্যাঁজলা বেরোতে দেখে জড়িয়ে ধরেন মেয়ে খাইরুলন্নেসা। তখনই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তিনিও। স্থানীয় বাসিন্দাদের যখন নজরে আসে, তখন তাঁদের শরীর ওই তারের সঙ্গে রয়েছে ঝুলন্ত অবস্থায়। দ্রুত বিদ্যুৎস্পৃষ্ট মুনতাহা, ইজহার ও খাইরুলন্নেসাকে উদ্ধার করে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মুনতাহা ও খাইরুলন্নেসাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকৎসকেরা। এদিকে ইজহারকে নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়।
তবে কীভাবে পাঁচিলের কাছাকাছি চলে এসেছিল হাইভোল্টেজ তার তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সিইএসসি-র আধিকারিকরা। সিইএসসি-র আধিকারিকদের প্রাথমিক অনুমান, কোনওভাবে ওই লোহার তারে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হচ্ছিল, যা বোঝা যায়নি। এরপর তারটি ভিজে কাপড়ের সংস্পর্শে আসায় দুর্ঘটনা ঘটেছে। প্রসঙ্গত, এর আগেও কলকাতার বুকে এই ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। হরিদেবপুরে খোলা তারের বলি হয়েছে এক শিশুও, যা নিয়ে তোলপাড় হয়েছে রাজ্য। এছাড়াও গত বছরই বেলঘরিয়ায় এক ছাত্রীর মৃত্যু হয় এই একই কারণেই। এইরকম ঘটনা বারংবার ঘটতে থাকায় খোলা তার নিয়ে একাধিকবার সিইএসসি-কে সতর্ক করা হয়েছে। কারণ, এসব তারই প্রাণঘাতী। কিন্তু তারপরও একবালপুরের মা-মেয়ের মৃত্যুর ঘটনা ফের বুঝিয়ে দিল সিইএসসি এখনও সতর্ক নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × 4 =