৩১ ডিসেম্বর শনিবার শেষ হল পঞ্চম দফার দুয়ারে সরকার। আগে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছিল ১ নভেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে এই পঞ্চম দফায় দুয়ারে সরকার। তবে পরে তা বাড়িয়ে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়। নবান্ন সূত্রে খবর, দুয়ারে সরকারের পঞ্চম দফায় গোটা রাজ্য জুড়ে ৮২ হাজার ৩৪৫টি ক্যাম্প চালানো হয়। তার মধ্যে ৩৪.৫ শতাংশ অর্থাৎ ২৮ হাজার ৩৮১টি ছিল মোবাইল ক্যাম্প। এই মোবাইল ক্যাম্পগুলির মাধ্যমে ১৪ লাখ ৯৫ হাজার রাজ্যবাসী নিজেদের সমস্যাগুলিকে রাজ্য সরকারের সামনে তুলে ধরেন। এছাড়াও ৯৭ লাখ রাজ্যবাসীর ইস্যু নথিভুক্ত হয়েছে এই ক্যাম্পগুলির মাধ্যমে। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে সেরার শিরোপাও পেয়েছে দুয়ার সরকার প্রকল্প। কেন্দ্রীয় বৈদ্যুতিন ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রকের পাবলিক ডিজিটাল প্লাটফর্ম ক্যাটেগরিতে প্ল্যাটিনাম পুরস্কার পেয়েছে রাজ্যের এই প্রকল্প।
নবান্ন সূত্রে জানানো হয়েছে, নভেম্বর-ডিসেম্বর এই দু’ মাসে রাজ্যবাসী প্রায় ১ কোটি ৭ লাখ আবেদন জমা করেছেন দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পগুলিতে। বিভিন্ন প্রকল্প ও পরিষেবা নিয়ে আবেদন জমাও পড়ে। এর মধ্যে সবথেকে বেশি আবেদন জমা পড়েছে বিনামূল্য সামাজিক সুরক্ষা যোজনায়। এই প্রকল্পের জন্য আবেদন এসেছে প্রায় ৩৫ লাখ। এছাড়া রাজ্য সরকারের অত্যন্ত জনপ্রিয় প্রকল্প ‘স্বাস্থ্যসাথী’ সংক্রান্ত বিষয়ে আবেদন জমা পড়েছে ১০ লাখেরও বেশি। এরই পাশাপাশি কৃষক বন্ধু প্রকল্পের জন্যও প্রায় ৮ লাখ ৩৪ হাজার আবেদন জমা পড়েছে।
এদিকে প্রথম থেকেই রাজ্যে মহিলাদের ক্ষমতায়নের উপর শুরু থেকেই বাড়তি নজর দিয়ে আসছে রাজ্য সরকার। কারণ, স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহিলাদের ক্ষমতায়নের পক্ষে সবসময়েই জোর সওয়াল করে থাকেন। যে কারণে মহিলাদের আর্থিকভাবে এগিয়ে আনার জন্য চালু করা হয় ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্প। তা নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিদ্ধ করতে ছাড়েননি বিরোধীরা। এদিকে আবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে শ্য বিজেপি নেতাদের মুখেও শোনা গেছে ক্ষমতায় এলে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা বাড়িয়ে দেওয়ার মতো প্রতিশ্রুতিও। এবার এই লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প সংক্রান্ত বিষয়েও আবেদন জমা পড়েছে ৭ লাখ ৬১ হাজার। মৎস্যজীবীদের রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত আবেদন জমা পড়েছে ৬ লাখ ৫৮ হাজার। এদিকে নবান্ন সূত্রে খবর, এবারের দুয়ারে সরকারে যে নতুন সুবিধাগুলি যুক্ত করা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে জমির পাট্টা সংক্রান্ত আবেদনও। সেখানেও ১ লাখ ২০ হাজার আবেদন জমা পড়েছে এই দুই মাসের মধ্যে। পাশাপাশি বিদ্যুতের মাশুলে ছাড় সংক্রান্ত আবেদন এসেছে ২ লাখ ২৫ হাজার। বিদ্যুতের নতুন সংযোগের জন্য আবেদন এসেছে ১ লাখ ২৭ হাজারেরও বেশি।