আমাদের ভালবাসা তোমাদের মুখে হাসি ফোটাবে। খেলা শুরুর আগে বোধহয় এই পোস্টার টম অ্যালড্রেডের চোখে পড়েছিল। ম্যাচের প্রথম কোয়ার্টারে বাগান জনতার মুখে হাসি ফোটান ব্রিটিশ ডিফেন্ডার। বাকি কাজটা সারেন লিস্টন কোলাসো। প্রথমার্ধ প্রায় শেষ হওয়ার মুখে। মনবীরের থেকে বল পেয়ে জামশেদপুরের পাঁচজনকে কাটিয়ে বাঁ পায়ের কোনাকুনি শটে দৃষ্টিনন্দন গোল লিস্টনের। চলতি আইএসএলে প্রথম গোল। তাই সেলিব্রেশনও ছিল দেখার মতো। দীর্ঘদিন পর গোয়ার ফুটবলারের পুরোনো ঝলক দেখা গেল। আগের দিন সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, ছন্দে ফেরার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। কথা রাখলেন। লিস্টনের গোলেই নিশ্চিত তিন পয়েন্ট। জামশেদপুরের চক্রব্যূহ ভেঙে দুরন্ত গোল করেন। ম্যাচের শেষ কোয়ার্টারে ব্যবধান বাড়ান ম্যাকলারেন। ওড়িশার সঙ্গে ড্র করার পর আবার জয়ে ফিরল সবুজ মেরুন। শনিবাসরীয় রাতে যুবভারতীতে জামশেদপুর এফসিকে ৩-০ গোলে হারাল মোহনবাগান। গোলদাতা টম অ্যালড্রেড, লিস্টন কোলাসো এবং জেমি ম্যাকলারেন। অন্যদিকে হারের হ্যাটট্রিক জামশেদপুরের। শেষ তিন ম্যাচে ১৩ গোল হজম।
এদিন দলে দুটো পরিবর্তন করেন হোসে মোলিনা। প্রথম একাদশে ফেরেন দীপেন্দু বিশ্বাস এবং দীপক টাংরি। ৪-২-৩-১ ফরমেশনে দল সাজান। সামনে জেমি ম্যাকলারেন। স্টুয়ার্টের ভূমিকায় দিমিত্রি পেত্রাতোস। ওড়িশা ম্যাচের পর এদিনও গোলের আপ্রাণ চেষ্টা করেন অস্ট্রেলিয়। কিন্তু গোল ভাগ্য এখনও খুলল না। শনি সন্ধেয় পুরোপুরি অফকালার ম্যাকলারেন। হাতেগোনা কয়েকবার বল পান বিশ্বকাপার। তবে তার মধ্যেই কাজের কাজ করে দেন। স্কোরশিটে নাম তোলা যেন অভ্যাসে পরিণত করেছেন। ম্যাচের ১৫ মিনিটে বাগানকে এগিয়ে দেন অ্যালড্রেড। দিমিত্রির কর্নার হেড করে বিপদমুক্ত করেন জামশেদপুরের ফুটবলার। টাংরির শট বিপক্ষের প্লেয়ারের গায়ে লেগে প্রতিহত হয়। হেড করে বল নামিয়ে দেন অ্যালবার্তো। চলন্ত বলে ডান পায়ের ভলিতে দারুণ গোল অ্যালড্রেডের। সাধারণত ডিফেন্ডারদের হেডে গোল করতে দেখা যায়। বিশেষ করে সেট পিসে। এদিন টমের গোলের প্রশংসা করতেই হবে। তার দশ মিনিটের মধ্যে ব্যবধান বাড়তে পারত। ২৫ মিনিটে শুভাশিসের পাস থেকে দিমিত্রির বাঁ পায়ের শট রোখেন জামশেদপুর গোলকিপার অ্যালবিনো গেমস। ফিরতি বল গোলে ঠেলতে পারেনি ম্যাকলারেন।
বিরতির আগেই ২-০ করে বাগান। ৪৫+২ মিনিটে গোল লিস্টনের। বিপক্ষের পাঁচজনকে কাটিয়ে অনবদ্য গোল। তারপর আরও অভিনব গোল উদযাপন। প্রথমার্ধের শেষে জোড়া গোলে এগিয়ে গেলেও খেলার মান আহামরি ছিল না। তবে দুই প্রান্তে হিট মনবীর, লিস্টন জুটি। মূলত উইং দিয়েই আক্রমণ শানাচ্ছিল বাগান। খালেদ জামিলের অনুপস্থিতিতে তাঁর দল একেবারেই ম্যাড়ম্যাড়ে। নব্বই মিনিটে মেরেকেটে দুটো হাফ চান্স। মিস করেন সিভেরিও। ম্যাচের বাকি সময়টা মোহনবাগানের। এদিন সবুজ মেরুন মাঝমাঠ যথেষ্ট ভাল খেলে। ম্যাচের ৭৫ মিনিটে তিন নম্বর গোল মোহনবাগানের। দীপক টাংরির লং বল রিসিভ করে নিখুঁত মাইনাস মনবীরের। আলতো পুশে তেকাঠিতে রাখেন ম্যাকলারেন। গোটা ম্যাচে খুব বেশি নজর না কাড়তে পারলেও, গোলটা চেনেন অজি বিশ্বকাপার। অবশ্য গোলটা প্লেটে করে সাজিয়ে দেন জামশেদপুরের গোলকিপার। ব্যবধান আরও বাড়তে পারত। কিন্তু ম্যাচের ৮৪ মিনিটে লিস্টনের শট পোস্টে লাগে। আগের ম্যাচে ড্রয়ের পর আবার জয়ের সরণিতে বাগান। তিন গোলের পাশাপাশি ক্লিনশিট রাখাও তৃপ্তি দেবে মোলিনাকে।