এএফসি কাপের ইন্টার জোনাল সেমিফাইনাল ম্যাচ এটিকে মোহনবাগানের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল আলাদা করে বলার দরকার নেই। ডুরান্ড কাপে ব্যর্থতার পর আজ ঘরের মাঠে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে এই ম্যাচ যে কোনোও মূল্যে জিততেই হত সবুজ মেরুন শিবিরকে। কারণ এবার প্রথম থেকেই টিম ম্যানেজমেন্ট এই টুর্নামেন্টে ভাল করার কথা মাথায় রেখে দল তৈরি করেছিলেন। চমক দিয়েছিলেন কোচ হুয়ান।
অস্ট্রেলিয়ান তারকা দিমিত্রি এবং ফরাসি হুগোকে ১৮ জনের দলে রাখেননি। পোগবা, হমিল, কার্ল, জনি – এই চার বিদেশি শুরু করেন মোহনবাগানের হয়ে। প্রথম থেকেই নিজেদের দখলে বল রেখে খেলা শুরু করে সবুজ মেরুন। লিস্টন, মনবীররা মুভমেন্ট করছিলেন বটে, কিন্তু খুব শ্লথ গতিতে।
এর ফলে বিপক্ষ ডিফেন্স নিজেদের গুছিয়ে নেওয়ার সময় পেয়ে যাচ্ছিল। সেভাবে থার্ড ম্যান মুভ করতে পারছিল না সবুজ মেরুন। তাই কার্যক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার দলকে প্রথমার্ধে পরাস্ত করতে পারেনি এটিকে মোহনবাগান। দ্বিতীয়ার্ধের ১৫ মিনিট খেলা গড়াতেই উল্টে গোল করে গেলেন মালয়েশিয়ার দলের ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার পাওলো জোসু। এটিকে মোহনবাগান দলের একটি থ্র কি আর করতে ব্যর্থ হন ডিফেন্ডার। বল হাওয়ায় থাকা অবস্থায় দুরন্ত ভলি মেরে সবুজ মেরুন গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন তিনি। এরপর কলম্বিয়ার ফুটবলার রোমেলকে নামিয়ে দেন মালয়েশিয়ার দলের কোচ। ৬৮ মিনিটে প্রীতমকে তুলে আশিষ রাইকে নামাল মোহনবাগান।
কিন্তু তাতে বিশেষ লাভ হল না। বিপক্ষ ডিফেন্স ভাঙতে যে ধরনের উইং আক্রমণ দরকার সেটাই ছিল না এটিকে মোহনবাগানের। ৭৫ মিনিটে হামিলকে তুলে নামানো হল ফারদিনকে। ম্যাচ শেষ হওয়ার পাঁচ মিনিট আগে নামানো হল কিয়ানকে। কোন কাজে না লাগলেও দীপক টাংরিকে কেন রেখে দেওয়া হল কোন মানে নেই। ঘরের মাঠে এই ম্যাচ হারা এবং এশিয়ার স্বপ্ন শেষ হয়ে যাওয়া তার দায় নিতে হবে ম্যানেজার হুয়ান ফেরান্ডোকে। ৯০ মিনিটের মাথায় ম্যাচের সমতা ফিরিয়ে এনেছিলেন ফারদিন। মনে হয়েছিল এখান থেকে ম্যাচটা হয়তো অতিরিক্ত সময়ে নিয়ে যাবে এটিকে মোহনবাগান। কিন্তু অতিরিক্ত ৬ মিনিটের মধ্যে অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, আরো দুটো গোল হজম করল সবুজ মেরুন। ফখরুল এবং রোমেল ৩-১ জয় এনে দিলেন মালয়েশিয়ার দলকে। ঘরের মাঠে স্বপ্নের সলিল সমাধি হয়ে গেল এটিকে মোহনবাগানের।