ভারতের কাছে হারের পরেই ফের একবার বাবর আজমের অধিনায়কত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এবার প্রশ্ন তুললেন প্রাক্তন পাক মহারথী মহম্মদ হাফিজ। বাবরের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স বলছে যে, তাঁর অধিনায়কত্বে পাকিস্তানের একাধিক ম্যাচে তীরে এসে তরী ডুবেছে। বাবরকে আসামীর কাঠগড়ায় তুলেছেন প্রাক্তন পাক অলরাউন্ডার। হাফিজের সাফ বক্তব্য বাবর কেন সময়ের মধ্যে স্পিনারদের কোটা পূরণ করেননি! বাবরকে ভয় পাওয়া গোরু বলেই তোপ দেগেছেন তিনি। এক সাক্ষাৎকারে হাফিজ বলেন, ‘বাবর আজমের অধিনায়কত্ব দেখলে মনে হয় যে, ও একটি ভয় পাওয়া গোরু। যার সমালোচনা করা যায় না।
এই নিয়ে টানা তৃতীয় বড় ম্যাচে ওর অধিনায়কত্বে ত্রুটি রয়েছে। আমরা শুধু শুনেই আসছি যে, বাবরের বয়স যখন ৩২ হবে তখন ও শিখে যাবে। রবিবারের ম্যাচে ভারতের বিরুদ্ধে ৭ থেকে ১১ ওভার পর্যন্ত ভারত ধুঁকছিল। এমনকী ওভারে চার রানও হচ্ছিল না। বাবর কেন সময়ের মধ্যে স্পিনারদের কোটা পূরণ করল না!’
গত রবিবার টি-২০ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে রুদ্ধশ্বাস মহাযুদ্ধ জিতেছে ভারত। মেলবোর্ন দেখেছিল সুপার সানডে। ‘মাদার অফ অল ব্যাটল’-এর শেষ ওভার ছিল যেন কোনও সাসপেন্স থ্রিলার। রোমহর্ষক এই ম্যাচ চার উইকেটে ছিনিয়ে নেয় ভারত! পাকিস্তানের ১৫৯ রান তাড়া করতে নেমে ভারত ৩১ রানে চার উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল। একটা সময় ম্যাচ থেকে কার্যত বেরিয়ে গিয়েছিল টিম ইন্ডিয়া। কিন্তু দলকে খাদের কিনারা থেকে তুলে এনে ম্যাচ জেতান বিরাট কোহলি ও হার্দিক পাণ্ডিয়া। চতুর্থ উইকেট পার্টনারশিপে বিরাট-হার্দিক ১১৩ রান যোগ করেছিলেন স্কোরবোর্ডে।
৩৭ বলে ৪০ রানের ইনিংস খেলে আউট হন হার্দিক। ৫৩ বলে ৮২ রানে অপরাজিত থাকেন বিরাট। হারতে বসা ম্যাচ দুরন্ত ভাবে জিতে নেয় ভারত।
শেষ ওভারে ভারতের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১৬ রান। বাঁ-হাতি স্পিনার মহম্মদ নওয়াজকে বল দিয়ে ম্যাচ বার করতে চেয়েছিল পাকিস্তান। নাওয়াজের প্রথম বলেই হার্দিক পাণ্ডিয়া আউট হয়ে যান। এরপরের বলে দীনেশ কার্তিক সিঙ্গল রান নেন। তৃতীয় বলে বিরাট কোহলি স্ট্রাইকে এসে দু’রান চুরি করে নেন। স্বভাবতই চতুর্থ বলে বিরাটই থাকেন স্ট্রাইকে। নওয়াজের হাত থেকে উড়ে আসে একটি হাই ফুল টস বল। কোহলি হুক করে বল ডিপ স্কোয়ার লেগের ওপর দিয়ে ওভার বাউন্ডারিতে চালান করে দেন। সঙ্গে সঙ্গে কোহলি নো বলের দাবি জানান, কোমরের ওপর বল উঠেছিল বলেই অভিযোগ করেন কোহলি। অন-ফিল্ড আম্পায়ার মারায়াস এরাসমাস দেরি করে হলেও ভারতের পক্ষেই রায় দেন। মেনে নেন কোহলির দাবি। বাবর আজমরা প্রতিবাদে গর্জে ওঠেন। ১৩ বলে ৩ রান থেকে ভারতের জেতার জন্য ৩ বলে ৬ টার্গেট হয়ে যায়। বাইতে ভারত তিন রান তুলে নেয়। এরপর পঞ্চম বলে কার্তিক স্টাম্পআউট হন। তারপর ষষ্ঠ বল ওয়াইড হয়। ওয়াইডের পরের বলটি অশ্বিন ফেস করেন। লেগসাইডে স্লাইড করে ভারতকে জিতিয়ে দেন তিনি।
বাবর বোলিং স্ট্র্যাটেজি নিয়ে ম্যাচের পর বলেছিলেন, ‘কোহলি-পাণ্ডিয়ার জুটি ভাঙার জন্য আমরা প্রধান বোলারদেরই এনেছিলাম। কিন্তু প্রত্যাশামতো পরিকল্পনা কাজ করেনি। নাওয়াজ আশা করি ভুল থেকে শিখবে। পরেরবার এরকম পরিস্থিতি আসলে, কী করা দরকার, সেটা ও বুঝবে।’ বাবর জানিয়েছেন যে, এই হার থেকে শিক্ষা নিয়ে তাঁরা দ্রুত ঘুরে দাঁড়িয়ে টুর্নামেন্টে ফিরবেন। পরের পর তাঁদের ম্যাচ রয়েছে। সেদিকেই ফোকাস করবে পাকিস্তান। বাবরের দল টি-২০ বিশ্বকাপে ছাপ রাখতে না পারলে, বাবরের অধিনায়কত্ব আদৌ থাকবে কিনা, তা নিয়ে ঘোরতর সংশয়। সেক্ষেত্রে মহম্মদ রিজওয়ান হতে পারেন পরবর্তী অধিনায়ক।