নাশকতা নির্মূল করতে কড়া প্রত্যাঘাতের ডাক মোদি-শাহর

সমস্ত ধরনের জঙ্গি হামলাকে (Terrorist attack) একই ভাবে দমন করা দরকার। সন্ত্রাসের ভয়াবহতা সম্পর্কে গোটা বিশ্ব অবহিত হওয়ার আগেই ভারত তা টের পেয়েছিল। শুক্রবার দিল্লিতে ‘নো মানি ফর টেরর’ (এনএমএফটি) শীর্ষক আলোচনাচক্রে এই দাবি করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসের প্রতিটি ঘটনার ক্ষেত্রেই সমতুল ক্রোধ এবং প্রত্যাঘাত প্রয়োজন।’ এ ক্ষেত্রে নাম না করে তিনি উরি-সন্ত্রাসের পর ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ এবং পুলওয়ামা হামলার জবাবে বালাকোটে বিমানহানার প্রসঙ্গে মনে করিয়ে দিতে চেয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে দু’দিনের আন্তর্জাতিক বৈঠক। সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় অর্থের জোগান কীভাবে বন্ধ করা যায়-সহ একাধিক বিষয় নিয়ে এই বৈঠকে আলোচনা হওয়ার কথা। উদীয়মান প্রযুক্তির অপব্যবহার এবং সন্ত্রাসবাদে অর্থের জোগানের মতো বিপদগুলির মোকাবিলায় চ্যালেঞ্জ এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মতো বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে দু’দিনের এই বৈঠকে। সামনেই কাতার বিশ্বকাপ আর সেই কারণে ১৪টি দেশ দু’দিনের এই বৈঠকে অংশ নিতে পারছে না।

অন্যদিকে, দিল্লিতে আয়োজিত ওই আলোচনাচক্রে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মন্তব্য, ‘সন্ত্রাসের চেয়েও সন্ত্রাসে আর্থিক মদত বড় অপরাধ।’  পাকিস্তানের নাম না করে মোদি এবং শাহ দু’জনের সন্ত্রাসে মদতের অভিযোগ তোলেন পড়শি দেশের বিরুদ্ধে। আন্তর্জাতিক দুনিয়াকে মোদির বার্তা, ‘জিরো টলারেন্স নীতি না নিলে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাফল্য পাওয়া কঠিন।’ শাহের কথায়, ‘আল কায়দার পাশাপাশি লস্কর-ই-তইবা, জইশ-ই-মহম্মদের মতো জঙ্গিগোষ্ঠী এখনও সক্রিয়। তাদের দমন করা প্রয়োজন।’

মোদিকে বলতে শোনা যায়, ‘সন্ত্রাসবাদকে শিকড় থেকে উপড়ে ফেলতে হলে চাই বৃহত্তর, সক্রিয়, পদ্ধতিগত পদক্ষেপ। নাগরিকদের নিরাপদে রাখতে চাইলে কবে আমাদের ঘরে জঙ্গিরা ঢুকে পড়বে সেজন্য অপেক্ষা করে লাভ নেই। আমাদেরই জঙ্গিদের পিছু নিতে হবে, তাদের সমস্ত নেটওয়ার্ককে ভেঙে দিতে হবে। এবং তাদের অর্থের জোগান বন্ধ করতে হবে। আজকের বিশ্বে কাউকে আর আলাদা করে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে কিছু বলার নেই। তবে এটা নিয়ে অনেকের মধ্যেই কিছু কিছু ভুল ধারণা কাজ করে।’

সম্প্রতি আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স’ (এফএটিএফ)-এর ধূসর তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে পাকিস্তানের নাম। জঙ্গি কার্যকলাপে অর্থ জোগানের অভিযোগে, গত চার বছর অভিযুক্ত পাকিস্তানকে ধূসর তালিকাতে রাখা হয়েছিল। কিন্তু গত এক বছরে ইসলামাবাদ সন্ত্রাসে আর্থিক মদত রুখতে সক্রিয়তা দেখিয়েছে বলে রাষ্ট্রসংঘ, আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার (আইএমএফ), বিশ্ব ব্যাংক, ‘দ্য এগমন্ট গ্রুপ অফ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট’-সহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে রায় দিয়েছেন। সঙ্গত কারণেই সেই পদক্ষেপে সায় নেই নয়াদিল্লির। শুক্রবার মোদি-শাহের বক্তৃতায় তার আঁচ মিলেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 − 9 =