ঝরঝরিয়ে ঝরছে ঝরনা। পাহাড়ে ধাক্কা খেয়ে বাষ্প হয়ে চারদিকে ভরিয়ে দিচ্ছে। দুধ সাদা ফেনিল ঝরনার সামনে ভেজা শরীরে নাচ করছেন ঐশ্বর্য রাই বচ্চন। বর্ষো রে মেঘা মেঘা…
রাই সুন্দরীর নাচ আর ব্যাক গ্রাউন্ডে আথিরাপল্লির জলপ্রপাতের যৌবনমত্ত রূপ।ভারতের নায়াগ্রা। এই নামেই পরিচিত কেরালার আথিরাপল্লি জলপ্রপাত। যা শুধু গুরু সিনেমা নয়, লোকশন হিসেবে ব্যবহার হয়েছে সুপার হিট সিনেমা বাহুবলীতেও।এই বর্ষায় যদি ঘুরতে যাওয়ার জায়গার খোঁজ থাকে, তাহলে বরং চলে যান কেরলে।
সবুজ নারকেল গাছের সারি, ব্যাক ওয়াটার, পাথুরে কোভালাম বিচ, চা-বাগানে ঘেরা ছবির মতো সাজানো মুন্নার যদি কেরালার অন্যতম আকর্ষণ হয়, তাহলে আথিরপল্লি তা থেকে বাদ পড়তে পারে না। বিশেষত বর্ষায়। জলপ্রপাতে তখন যৌবনের খেলা… যে রূপ, সৌন্দর্য কাছে গিয়েই অনুভব করতে হয়।
কেরালার ত্রিসূর জেলার চালাকুডি তালুক পঞ্চায়েত এলাকায় রয়েছে আথিরাপল্লি জলপ্রপাত।বলিউডের একাধিক ছবিতে এই জলপ্রপাত দেখানোর পরই এর গুরুত্ব বেড়ে গিয়েছে। আগে লোকে এই জলপ্রপাতের নাম সেভাবে না শুনলেও, এখন শুধু আথিরাপল্লির টানেই দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন পর্যটকরা।চালাকুডি নদীর জলই পাহাড় থেকে অবিরাম ঝরে পড়ছে এখানে।বর্ষায় যখন চারপাশ আরও বেশি সবুজ হয়ে যায়, তখন জলপ্রপাতের ফেনিল জলরাশি যেন আরও মোহময় হয়ে ওঠে। পাহাড়ে গায়ে জলের অনুরণনে এক অদ্ভূত মাদকতা তৈরি হয়।চারপাশে জঙ্গল, পশ্চিম ঘাট পর্বতের সৌন্দর্য, পাখির ডাক সবটা মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়।
আথিরাপল্লি ঘোরার সময়- সকাল ৮টা থেকে সন্ধে ৬টা।
এন্ট্রি ফি- ১৫ টাকা।
আথিরাপল্লি যাওয়ার ভালো সময়- জুন থেকে অক্টোবর
আশপাশে ঘোরার জায়গা-চাপড়া ফলস, শোলায়ার ড্যাম, ভালপাড়াই ও মালায়াত্তুর ওয়াইল্ড লাইফ স্যানচুয়ারি।
থাকা- আথিরাপল্লির আশপাশে বিভিন্ন মানের হোটেল আছে। তবে বাজেট যদি একটু বেশি হয়, তাহলে ট্রি হাউজে থাকার কথা ভাবতে পারেন। জঙ্গলের মধ্যে ট্রি হাউজে বসে জলপ্রপাত, পাখি দেখার মজাই আলাদা।
কীভাবে যাবেন-কোচি ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থেকে আথিরাপল্লি ৫৫ কিলোমিটার দূরে। এর সবচেয়ে কাছের রেলস্টেশন চালাকুডি। জলপ্রপাত থেকে সেটা ৩০ কিলোমিটার দূরে।
কলকাতা থেকে আসতে হলে রেলপথ বা বিমান দুটোই সহজ হবে। ট্রেনে এরনাকুলাম এসে গাড়ি করে আথিরাপল্লি।বিমানে কোচি এসে সড়কপথে জলপ্রপাত।