টি–টোয়েন্টি ক্রিকেট মানেই ব্যাটারদের দাপট—চার-ছয়ের ঝড়, স্টেডিয়ামজুড়ে উচ্ছ্বাস আর রান-বন্যার প্রত্যাশা। অনেকের কাছেই এই ফরম্যাটে বোলাররা যেন প্রায় অপ্রয়োজনীয়, বোলিং মেশিন দিয়েই কাজ চলে যেতে পারে। কিন্তু ক্রিকেট যে অনিশ্চয়তার খেলা, তা আরও একবার প্রমাণ করে দিল ধরমশালার রবিবারের রাত। সে দিন ব্যাট নয়, আলো কাড়ল বল; ব্যাটসম্যানদের নয়, নায়ক হয়ে উঠলেন ভারতীয় বোলাররাই।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে তৃতীয় টি–টোয়েন্টিতে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ভারতীয় অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব। শিশির পড়ার সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত, যা ম্যাচের শুরু থেকেই সঠিক বলে প্রমাণিত হয়। প্রথম ওভারেই অর্শদীপ সিং ফিরিয়ে দেন রিলি রুসো নয়, বরং ওপেনার রিকেলটন হেনড্রিক্সকে শূন্য রানে। প্রোটিয়া ইনিংস তখনই চাপে পড়ে যায়। পরের ওভারের দ্বিতীয় বলেই গম্ভীরের আস্থাভাজন হর্ষিত রানা সাজঘরে ফেরান কুইন্টন ডি কককে (১)। তরুণ পেসারের আগ্রাসী বোলিংয়ে দিশাহারা হয়ে যান দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটাররা।
হর্ষিত এখানেই থামেননি। তাঁর বলে মাত্র ২ রান করে প্লেড অন হন ডিওয়াল্ড ব্রেভিস। একে একে ফিরে যান স্টাবস (৯), বশ (৯), জানসেন (২)। মাঝের ওভারগুলোতে স্পিনের জালে প্রোটিয়াদের বেঁধে ফেলেন বরুণ চক্রবর্তী ও কুলদীপ যাদব। হার্দিক পাণ্ডিয়া ও শিবম দুবেও প্রয়োজনীয় সময়ে উইকেট তুলে নিয়ে চাপ আরও বাড়িয়ে দেন। দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস কার্যত ভেঙে পড়ে।
তবে শেষদিকে দলের মান বাঁচানোর লড়াই লড়েন প্রোটিয়া অধিনায়ক। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ৪০ বলে ৪৬ রানের ইনিংস খেলে তিনি দলকে কিছুটা সম্মানজনক স্কোরে পৌঁছে দেন। শেষ ওভারে কুলদীপ যাদব দু’টি উইকেট তুলে নিলে ১১৭ রানে গুটিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস। অর্শদীপ, হর্ষিত, বরুণ ও কুলদীপ নেন দু’টি করে উইকেট, আর পাণ্ডিয়া ও দুবে নেন একটি করে।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে কোনো রকম চাপ না নিয়েই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ভারত। অভিষেক শর্মা (৩২), শুভমন গিল ও তিলক বর্মার সাবলীল ব্যাটিংয়ে হাসতে হাসতেই জয় তুলে নেয় টিম ইন্ডিয়া। এই জয়ের মাধ্যমে তৃতীয় টি–টোয়েন্টি জিতে সিরিজে লিড নেয় মেন ইন ব্লু। ধরমশালার এই ম্যাচ প্রমাণ করে দিল—টি–টোয়েন্টিতেও কখনও কখনও বোলাররাই হতে পারেন ম্যাচের আসল নায়ক।

