নবনির্মিত রিজার্ভারের পাটা খুলতে নেমে দুর্গাপুরে দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু রাজমিস্ত্রীদের

দুর্গাপুর : নব নির্মিত রিজর্ভার। দীর্ঘদিন বন্ধ রিজার্ভারের পাটা খুলতে নেমে মৃত্যু হল দুই রাজমিস্ত্রির। বরাত জোরে প্রাণে বাঁচল একজন। বুধবার সাতসকালে মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, দুর্গাপুরের ২৭ নং ওয়ার্ডের পার্ক অ্যাভিনিউ এলাকায় একটি আবাসনে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বিধাননগর ফাঁড়ির পুলিশ। ঘটনার জেরে শোরগোল পড়েছে শিল্প শহর জুড়ে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মৃত রাজমিস্ত্রি হুমায়ুন শেখ (৫৫) ও রাজমিস্ত্রির সহকারীর নাম বাবলু শেখ(২৭) মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা। দুর্গাপুরের ২৭ নং ওয়ার্ডের পার্ক অ্যাভিনিউ এলাকায় একটি আবাসনে রিজার্ভার তৈরির কাজ চলছিল। বাড়িটি সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় নামে একজন বাসিন্দার। করোনা আবহে মারা যাওয়ার পর তার ছেলে বৌমা কর্মসূত্রে সৌদি আরবে থাকেন। বাড়িটি দেখভাল করছিলেন প্রতিবেশী কাঞ্চন লায়েক। নতুন রিজার্ভার তৈরির কাজ চলছিল। ১৫ দিন আগে রিজার্ভার ঢালাই করে পরবের জন্য মুর্শিদাবাদের বাড়ি গিয়েছিলেন রাজমিস্ত্রি ও সহকারীরা।

বুধবার ফিরে এসে ঢালাইয়ের পাটা খোলার কাজ করতে নামেন সহকারী বাবলু শেখ। রিজার্ভারে নেমেই দমবন্ধ হয়ে আসছিল তাঁর। তিনি চিৎকার করতেই সেই রিজার্ভারে ঝাঁপ দেন রাজমিস্ত্রি হুমায়ুন শেখ। হুমায়ুনেরও সেই দুর্গন্ধে দম বন্ধ হয়ে ওঠার উপক্রম হয়। ওই সময় ওপরে থাকা রাজমিস্ত্রির আরেক সহকারী চিৎকার শুরু করে দেন। তখন আশপাশের স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে আসেন। তাঁরাই খবর দেন নিউ টাউনশিপ থানার পুলিশ এবং দমকল বিভাগে। দমকল বিভাগের কর্মীরা এসে ওই দুই জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করেন।

এরপর নিউ টাউনশিপ থানার পুলিশ তাঁদের বিধাননগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃতদেহ দু’টি ময়নাতদন্তের জন্য দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। দমকল বাহিনীর প্রাথমিক অনুমান, দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার জেরে রিজার্ভারের ভিতর উৎপন্ন হয়েছিল বিষাক্ত গ্যাস।

সেই গ্যাস থেকেই এই দুর্ঘটনা।” দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার ডা. ধীমান মণ্ডল বলেন, “দীর্ঘ দিন ধরে কোনও ট্যাংক বন্ধ থাকলে মিথেন গ্যাস উৎপন্ন হয়। সেই গ্যাস থেকেই এই দুই শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে বলে আমাদের প্রাথমিক অনুমান। তবে ময়না তদন্তের পরেই আসল কারণ জানা যাবে।” ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে শিল্পশহরজুড়ে। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × two =