দ্বিতীয়বারের জন্য ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ মানিক সাহার

দ্বিতীয়বারের জন্য ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন ডাঃ মানিক সাহা। বুধবার এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। এদিন প্রধানমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়েই শপথ বাক্য পাঠ করেন মানিক। শুধু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিই নন, এদিনের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডাও।

সূত্রে খবর, আগরতলার বিবেকানন্দ ময়দানে এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মঙ্গলবারই ত্রিপুরায় পৌঁছে যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তবে ভোট-পরবর্তী হিংসার প্রতিবাদে এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান বয়কট করে বাম-কংগ্রেস জোট। ২০২৩ সালের ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে ফের একবার সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়  বিজেপি। তবে নির্বাচনের আগে কোনও মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীর মুখ ঠিক না করেই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল বিজেপি। ফলে মানিক সাহা নাকি কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর গদি পাবেন, তা নিয়েই চলছিল চাপা উত্তেজনা। এই নির্বাচনে প্রতিমাকে সিপিএম-র প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের গড় ধানপুর কেন্দ্র থেকে ভোটে লড়তে বলা হয়। এই কঠিন পরীক্ষায় জয় আসে তাঁরও। সিপিএম প্রার্থীকে হারিয়ে জয়ী হন তিনি। এই প্রথম তাঁর হাত ধরেই লালগড়ে ফোটে পদ্ম ফুল। তাই মনে করা হচ্ছিল এই মহিলাকেই মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসাতে পারে বিজেপি। তবে সব জল্পনার অবসান ঘটে  সোমবার। বিজেপির তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, মানিক সাহাই হচ্ছেন ত্রিপুরার পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী। নবনির্বাচিত বিজেপি বিধায়করা তাঁকেই বেছে নেন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে। তারপর সোমবারই সরকার গঠনের দাবি জানান মানিক সাহা। আর আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও অন্যান্য় বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় নেতৃত্বদের উপস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিলেন মানিক সাহা। আর মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তাঁর দ্বিতীয় পর্বের যাত্রার সূচনা হল। এ দিন মানিক সাহা ছাড়া অন্যান্য বিজেপি বিধায়করাও শপথ গ্রহণ করেন।

প্রসঙ্গত, বিধানসভা নির্বাচনের কয়েক মাস আগেই বিপ্লব দেবকে সরিয়ে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী পদে বসানো হয় ডাঃ মানিক সাহাকে। ২০১৬ সালে কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন ডাঃ মানিক সাহা। এরপর বিজেপির হয়ে তৃণমূল স্তরে কাজ করলেও তাঁর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কোনও পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিল না। ২০২০ সালে তাঁকে রাজ্য বিজেপির প্রধান করা হয়। মুখ্যমন্ত্রীর আসনে গত বছর মে মাসে বসার পরই টাউন বরদোয়ালি কেন্দ্র থেকে প্রথম উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তিনি। সেই নির্বাচনে জেতেনও ডাঃ মানিক সাহা।

এক রাজনীতিবিদ হওয়ার পাশাপাশি ৬৯ বছর বয়সী মানিক সাহা পেশায় একজন ডেন্টাল সার্জেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, ত্রিপুরাবাসীর মনে একটা স্বচ্ছ ভাবমূর্তি রয়েছে ডাঃ মানিক সাহার। আর তার উপর ভর করেই ফের একবার ত্রিপুরার মুখ্য়মন্ত্রী হয়ে ফিরলেন মানিক।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eighteen + six =