ম্যাঞ্চেস্টার টেস্টে রবীন্দ্র জাডেজা ও ওয়াশিংটন সুন্দরের দুরন্ত লড়াইয়ের দৌলতে ইংল্যান্ডের মুখের জয় ছিনিয়ে নিয়ে সম্মান রক্ষা করল ভারত। পঞ্চম দিনের শেষে ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস ম্যাচ ড্রয়ের প্রস্তাব দিলে তা গ্রহণ করেন ভারত অধিনায়ক শুভমান গিল। ফলে সিরিজে এগিয়ে থাকলেও এই ম্যাচে নৈতিক জয় ভারতের বলেই মনে করছেন অনেকেই।
প্রথম ইনিংসে ভারত তুলেছিল ৩৫৮ রান। জবাবে ইংল্যান্ড বিশাল স্কোর তোলে—৬৬৯ রান, যেখানে ভারতীয় বোলিং ছিল কার্যত দিশাহীন। রানের পাহাড়ে চড়ে তারা ৩১১ রানের লিড নেয়। এমন অবস্থায় দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ভারতের দুই ওপেনার যশস্বী জয়সওয়াল ও অভিষেক সুদর্শন ক্রিস ওকসের এক ওভারের মধ্যে আউট হয়ে যান। লাঞ্চের সময় ভারতের স্কোর ছিল ২ উইকেটে ১ রান। সেখান থেকেই শুরু হয় ভারতের ম্যাচ বাঁচানোর লড়াই।
ক্রিজে ছিলেন কেএল রাহুল ও অধিনায়ক শুভমান গিল। তাঁরা দুরন্ত ধৈর্য ও দৃঢ়তায় চতুর্থ দিনের শেষে ভারতকে চাঙ্গা করে তোলেন। রাহুল অপরাজিত ছিলেন ৮৭ রানে, গিল ৭৮-এ। তবে পঞ্চম দিনের শুরুতেই রাহুল বেন স্টোকসের বলে ৯০ রানে আউট হন। এরপরও অধিনায়ক গিল লড়াই চালিয়ে যান। একসময় স্টোকসের বাউন্সারে আঘাত পান গিল, কিন্তু পিছু হঠেননি। ২২৮ বল খেলে শতরান করেন তিনি। তবে এরপরেই আর্চারের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ১০৩ রানে।
এত কিছুর পরও ভারতের লড়াই থেমে যায়নি। রবীন্দ্র জাডেজা এবং ওয়াশিংটন সুন্দর গড়েন দুর্দান্ত জুটি। জাডেজা ছক্কা মেরে শতরান পূর্ণ করেন, যা তাঁর ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ইনিংস। অপরদিকে জীবনের প্রথম টেস্ট শতরান করেন তরুণ অলরাউন্ডার ওয়াশিংটন সুন্দর। এই লড়াই ভারতীয় ড্রেসিংরুমে এনে দেয় নতুন জোশ।
খেলাটি তখন প্রবলভাবে ভারতের দিকে ঝুঁকছে, মানসিকতায়। এই পরিস্থিতিতেই বেন স্টোকস ড্রয়ের প্রস্তাব দেন। তখনও খেলা বাকি ছিল প্রায় ১০ ওভার। শুভমান গিল সেই প্রস্তাব মেনে নিলে, টেস্টের পর্দা নামে সম্মানের ড্রয়ের মাধ্যমে।
এই ম্যাচ প্রমাণ করে দিল, ভারতীয় দলের মধ্যে এখনও রয়েছে লড়াইয়ের মানসিকতা। জাডেজার অভিজ্ঞতা আর ওয়াশিংটনের উদ্যম মিলে এক নতুন ইতিহাস গড়ে দিল। যদিও ম্যাঞ্চেস্টারে ভারতের জয় অধরাই রইল, কিন্তু এই ড্রকেও অনেকেই জয় বলেই মানছেন। সিরিজে পিছিয়ে থাকলেও ভারত নৈতিকভাবে হারেনি—এটাই সবচেয়ে বড় সান্ত্বনা।

