কলকাতা: যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে ফিরে আসা রাজ্যের পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ যাতে নষ্ট না হয়, সেটা দেখবে রাজ্য সরকার। এভাবেই তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পড়ুয়ারা যাতে এ রাজ্যেই নির্বিঘ্নে তাঁদের বাকি পড়াশোনা শেষ করতে পারেন, সেজন্য একাধিক পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। পড়ুয়াদের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও চিঠি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার কলকাতার ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে ইউক্রেন ফেরৎ পড়ুয়াদের সঙ্গে আলাপচারিতার আয়োজন করে রাজ্য সরকার। মমতা ব¨্যােপাধ্যায় বলেন, ৩৯১ জন পড়ুয়া ইউক্রেন থেকে ফেরত এসেছেন। ইঞ্জিনিয়ারদের বাংলায় লেখাপড়ার ব্যবস্থা করা হবে। টাকা পয়সা যাতে বেশি না খরচ হয় সেদিকে খেয়াল রাখা হবে। পড়ুয়ারা ইন্টার্নশিপ সরকারি কলেজে করতে পারবেন। দেওয়া হবে স্টাইপেন্ডও।
ইউক্রেনে বাংলা থেকে অনেকে মেডিক্যাল পড়তে গিয়েছিলেন। তাঁদের ফিরে আসতে হয়েছে। সেই সব পড়ুয়াদের জন্যও মুখ্যমন্ত্রী জানান, জাতীয় মেডিক্যাল কাউন্সিল ছাড়পত্র দিলে ইউক্রেনে ডাক্তারির চতুর্থ পঞ্চম ও ষষ্ঠ বর্ষের পড়ুয়াদের রাজ্যের হাসপাতালে ইন্টার্ন হিসেবে নিয়োগ করা হবে। সেজন্য তাঁদের স্টাইপেন্ডও দেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কাউন্সিল যদি এতে আপত্তি জানায় তাহলে তিনি নিজে হস্তক্ষেপ করবেন। তাঁর কথায়, ‘প্রয়োজনে দিল্লিতে ন্যাশনাল মেডিক্যালে যাব সবাইকে নিয়ে।’ তিনি বলেন, ‘এটা একটি নতুন উদাহরণ স্থাপন করবে। আমরা এটা সফলভাবে করতে পারলে অন্য রাজ্যগুলিও অনুসরণ করবে।’ রাজ্যের দুই সচিব পর্যায়ের আধিকারিক দিল্লিতে গিয়ে অনুমতি নেবেন এর জন্য।’ স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম এবং মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের সচিব পি বি সেলিমকে তিনি ওই দায়িত্ব দেন। জানান, ইউক্রেন ফেরত পড়ুয়ারা স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের জন্যও আবেদন করতে পারবেন।
ইউক্রেন ফেরত মেডিক্যাল পড়ুয়াদের রাজ্যের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পড়ার সুযোগ করে দিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওইসব পড়ুয়াদের স্বার্থে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে একটি অভিন্ন নীতির দাবি জানিয়েছেন তিনি। চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে পাঠ অসম্পূর্ণ রেখে ফিরে আসা পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের স্বার্থে রাজ্য সরকার একাধিক উদ্যোগ নিয়েছে। রাজ্যের বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলিতে সরকারের যে কোটা আছে সেগুলিতে এই পড়ুয়াদের ভর্তির ব্যবস্থা করা হবে। তাঁদের পড়াশোনার খরচ সরকার বহন করবে। তবে এই পড়ুয়াদের সুযোগ দিতে গিয়ে নতুন ছাত্রছাত্রীরা যাতে বঞ্চিত না হন সে জন্য মেডিক্যাল কলেজগুলিতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক আসন বৃদ্ধির অনুমতি দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। দেশে যেহেতু চিকিৎসা শিক্ষা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, তাই বেশ কিছু বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি প্রয়োজন। আর সেটাই চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।