বাম জমানা থেকে অবহেলিত ছিল মালদার একমাত্র মহাশ্মশান সাদুলাপুর। বর্তমান রাজ্য সরকার এবং তৃণমূল পরিচালিত জেলা পরিষদের উদ্যোগে ঝাঁ-চকচকে হিসেব গড়ে উঠেছে মালদার সাদুল্লাপুর মহাশ্মশান। এমনকি এই শ্মশানে পাশেই রয়েছে ভাগীরথী নদী। একটা সময় সেই নদীর জল বদ্ধ জলাশয়ে পরিণত হয়েছিল। গঙ্গার সাথে সংযোগ থাকলেও সেই নদীতে জলপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল । কিন্তু নতুন একটি কালভার্ট করে গঙ্গার সাথে ভাগীরথী নদীর জলস্রোতের সংযোগ তৈরি করার ব্যবস্থাও করা হয় জেলা পরিষদের উদ্যোগে। বর্তমানে মালদার সাদুল্লাপুর মহাশ্মশান একদিকে তৈরি হয়েছে রকমারি ফুল – ফলের গাছের বাগান। আর একদিকে গড়ে তোলা হয়েছে প্রায় প্রায় ৪০ ফিটের মহাদেবের বিশালাকৃতির মূর্তি। চতুর্দিকে রয়েছে রঙিন আলোকসজ্জা। শবদেহ নিয়ে আসা লোকেদের শান্তি কামনায় বসানো হয়েছে নাম সংকীর্তন সোনার সংগীত শব্দ।
দীর্ঘদিনের বেহাল থাকা সদুল্লাপুর মহাশ্মশানের এমন উন্নতি ও রূপসজ্জা দেখে প্রশংসা করেছেন শবদেহ নিয়ে আসা সাধারণ মানুষ থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা । এই মহাশ্মশানে রয়েছে বৈদ্যুতিক চুল্লির ব্যবস্থা । যার মাধ্যমে মৃতদেহের সৎকার্য করা হয়ে থাকে ।স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, নতুন করে সাদুলাপুর মহাশ্মশান রূপসজ্জা দেওয়া হলেও, ভাগীরথী নদীর সংস্কার করার প্রয়োজন রয়েছে। নইলে ধীরে ধীরে জঞ্জালের স্তূপে এই নদী সংকীর্ণ হয়ে পড়ছে। জেলার পরিবেশবিদদের বক্তব্য, প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে নদীর সংস্কার অত্যন্ত জরুরী । ভাগীরথী নদীর সংস্কারের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন ও পঞ্চায়েতকেও জানিয়েছেন মালদার পরিবেশবিদদের একটি অংশ।
মালদা শহর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে রয়েছে সাদুলাপুর মহাশ্মশানটি। দিনে অন্তত ৮ থেকে ১০টি শবদেহ সৎকার্য হয় এই মহাশ্মশানের বৈদ্যুতিক চুল্লিতে। এছাড়াও গোটা এলাকাটি মার্বেল এবং টাইলস দিয়ে মুড়িয়ে ফেলা হয়েছে।মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতি রফিকুল হোসেন জানিয়েছেন, একটা সময় ঘন জঙ্গলে ভরা ছিল সাদুলাপুর মহাশ্মশানটি। বিদ্যুৎ ব্যবস্থাও ছিল বেহাল। কিন্তু এখন ধীরে ধীরে সেটি ঝাঁ-চকচকে হিসাবে গড়ে উঠেছে। শবদেহ নিয়ে আসা মানুষের আর এখন সমস্যা হয় না । তবে আমাদের লক্ষ্য রয়েছে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের মাধ্যমে যতটা সম্ভব ভাগীরথী নদী সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া। এব্যাপারে আমরা রাজ্য প্রশাসনকে জানিয়েছি।