এবারের ত্রিস্তর পঞ্চায়েত মালদা জেলা পরিষদের নির্বাচনে বিরোধী দল বিজেপি, কংগ্রেস এবং সিপিএমকে ধুয়ে মুছে সাফ করে দিল শাসকদল তৃণমূল। মালদা জেলা পরিষদের মোট ৪৩টি আসনের মধ্যে ৩৩টি আসন দখল করল তৃণমূল। ৬টি আসন পেয়েছে কংগ্রেস। বাকি ৪টি আসন পেয়েছে বিজেপি। বুধবার সকালে সম্পন্ন হয় মালদা জেলা পরিষদের নির্বাচনের ফলাফল। আর জেলা পরিষদের ফলাফল ঘোষণা হতেই এখন থেকেই সভাধিপতি কে হবেন তা নিয়ে শুরু হয়েছে তৃণমূলের অন্দরে জোর আলোচনা।
যেহেতু এবারে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতির আসনটি মহিলা তপশিলি জাতি সংরক্ষিত। সুতরাং জেলা পরিষদের ফলাফল ঘোষণার পর থেকেই সভাধিপতি হিসেবে নাম উঠে আসছে ইংরেজবাজারের ৩৩ নম্বর মালদা জেলা পরিষদের তৃণমূল দলের বিজয় প্রার্থী লিপিকা বর্মন ঘোষের। এছাড়াও সভাধিপতি দৌড়ে রয়েছে চাঁচলের ২৪ নম্বর আসনের মালদা জেলা পরিষদের তৃণমূলের বিজয়ী প্রার্থী মঙ্গলি চৌধুরী এবং মানিকচকের ২৮ নম্বর আসনের তৃণমূলের বিজয়ী প্রার্থী কবিতা মণ্ডলের।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, যেহেতু তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক ব¨্যােপাধ্যায়ের মনোনীত প্রার্থী ২৪ নম্বর আসনের লিপিকা বর্মন ঘোষ এবং তিনি তপশিলি জাতিভুক্ত। সুতরাং তৃণমূলের ইংরেজবাজারের ওই বিজয় প্রার্থী এখন মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতির দৌড়েই অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন। এখন শুধু মালদা জেলা পরিষদের বোর্ড গঠনের অপেক্ষায় রয়েছে দলীয় নেতৃত্ব।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক আধুর রহিম বক্সী জানিয়েছেন, মালদা জেলা পরিষদে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতায় দখল করেছে তৃণমূল। ৪৩ টি আসনের মধ্যে ৩৩টি আসন পেয়েছে তৃণমূল। যেহেতু এবারে মহিলা সংরক্ষিত তপশিলি জাতির সভাধিপতির পদটি রয়েছে। এক্ষেত্রে কয়েকজন মহিলা তৃণমূল প্রার্থী বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন। মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতির বিষয়টি ঠিক করবে রাজ্য নেতৃত্ব। আমরা বিজয়ী প্রার্থীদের তালিকা ইতিমধ্যে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সারারাত ধরে জেলা পরিষদ আসনের গণনা হয় জেলার বিভিন্ন কেন্দ্রে। জেলার মোট জেলা পরিষদের আসন সংখ্যা ৪৩ ইংরেজবাজার ব্লকের তিনটি আসন-সহ মোট ৩৩টি আসন দখল করেছে তৃণমূল। ৬টি আসন দখল করেছে কংগ্রেস এবং ৪টি আসন দখল করেছে বিজেপি।
এর পাশাপাশি বহু পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করেছে তৃণমূল। রাজ্যের অন্যান্য জেলার পাশাপাশি মালদা জেলাতেও তৃণমূলের জয়জয়কার। মঙ্গলবার সকাল আটটা থেকে প্রতিটি ব্লকের গণনা কেন্দ্রে শুরু হয় গণনা প্রক্রিয়া। প্রথমে গ্রাম পঞ্চায়েত আসনের গণনা, এরপর পঞ্চায়েত সমিতির গণনা এবং সবশেষে গণনা শুরু হয় জেলা পরিষদ আসনের। ব্যালট গোনা হয় সারা রাত ধরে। প্রতিটি গণনা কেন্দ্রে মোতায়ন ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্য পুলিশ। গণনা কেন্দ্রে কোনোরকম অশান্তির খবর পাওয়া যায়নি। তবে জেলা পরিষদ আসনের ফলাফল ঘোষণা করতে বুধবার সকাল হয়ে যায়।
বুধবার সকালে জেলা পরিষদের জয়ী প্রার্থীদের হাতে শংসাপত্র তুলে দেন ইংরেজবাজার ব্লকের বিডিও সৌগত চৌধুরী। জেলা পরিষদের তৃণমূল প্রার্থী লিপিকা বর্মন ঘোষ বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নমূলক প্রকল্পের প্রচার করে জনসমর্থন পেয়েছেন তাঁরা। আগামী দিনে মানুষের জন্য কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।