পরম্পরা বজায় রেখে আজও জমিদার বাড়ির দালানবাড়িতে চলছে পোস্ট অফিস

মহেশ্বর চক্রবর্তী
হুগলি জেলার মধ্যে অন্যতম ঐতিহ্যবাহী ও প্রাচীন জমিদার বাড়ি হল আরামবাগের হাটবসন্তপুরের নন্দী জমিদার বাড়ি। এই জমিদার বাড়ির বিশাল আকৃতির দালান বাড়ির একদিকে দুর্গা পুজো যেমন হয় তেমনি অন্যদিকে গড়ে উঠেছে পোস্ট অফিস। এই প্রাচীন পোস্ট অফিসের গরিমা আরও বৃদ্ধি হল বর্তমান পোস্ট মাস্টার শৈলেন ঘোষালের হাত ধরে। রাজ্যের মধ্যে সেরা পোস্ট মাস্টার হলেন তিনি। জানা গিয়েছে, এই পোস্ট অফিস কবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তা হয়তো সরকারি নথি দেখলে জানা যাবে। তবে প্রতিষ্ঠার প্রথম দিন থেকেই জমিদার বাড়ির সদস্যরা কোনও ভাড়া নেন না। নিঃশর্তে সরকারি কাজে এবং গ্রামের মানুষের স্বার্থে ব্যবহারের অনুমতি দেন। জমিদার বাড়ির ঐতিহ্য বজায় রেখে আজও সকাল হলেই নন্দী জমিদার বাড়ির দালানে লম্বা লাইন পড়ে। পোস্ট মাস্টারও তাদের স্বার্থে কাজ করে চলেছে। প্রাচীন এই পোস্ট অফিস এখনও গ্রামের কাছে গর্ব। এই গর্ব ও ঐতিহ্য সমান ভাবে ধরে রেখেছেন ওই গ্রামের বাসিন্দা তথা পোস্ট মাস্টার শৈলেন ঘোষাল। অক্লান্ত পরিশ্রম করে সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দিয়ে চলেছেন। সারা পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে সেরা পোস্ট মাস্টার হিসেবে ডাক সেবা অ্যাওয়ার্ড পান শৈলেন ঘোষাল। এমনকী আধার কার্ডের সঙ্গে মোবাইল লিঙ্কের বিষয়ে পাঁচ হাজার লক্ষ্য মাত্রা পার করলেই রাজ্য সরকার একটা স্কুটি দেবে বলে ঘোষণা করে। হাটবসন্তপুর পোস্ট অফিস অতি সহজেই লক্ষ্য মাত্র পার করে।আরামবাগ মহকুমার মধ্যে এই পোস্ট অফিস একাই সতেরো হাজার মানুষের আধার কার্ডের সঙ্গে মোবাইলের লিঙ্ক করায়। স্বাভাবিক ভাবেই এই পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টারের নাম পুরস্কার ঘোষিত হয়। এমনটাই দাবি, পোস্ট মাস্টার শৈলেন ঘোষালের। পাশাপাশি হুগলি জেলার মধ্যে গোল্ড বন্ড বন্টনে প্রথম স্থান অধিকার করে হাট বসন্তপুর পোস্ট অফিস।রাজ্য সরকারে লক্ষ্মী ভাণ্ডার থেকে শুরু করে বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতাসহ অন্যান্য পরিষেবা দিয়ে চলেছে এই পোস্ট অফিস। বিশেষ সূত্রে জানা গিয়েছে, জনগণকে এই সব নানা পরিষেবা দেওয়া ও ঐতিহ্য বজায় রেখে এলাকার মানুষের জন্য কাজ করার জন্য হাটবসন্তপুর পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার শৈলেন ঘোষালের নাম মেঘদূত অ্যাওয়ার্ডের জন্য দিল্লিতে পাঠানো হয়েছে। এই বিষয়ে শৈলেনবাবু বলেন, এলাকার মানুষকে পরিষেবার ব্রত নিয়েই চাকরিতে যোগ দিয়েছিলাম। এখনও সেই কাজ করে যাচ্ছি। এলাকার মানুষকে সঠিকভাবে সরকারি পরিষেবা পৌঁছে দেওয়াই আমার কর্তব্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − 4 =