সব কিছু ঠিকঠাক চললে, আবারও ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গলের (সিএবি) প্রেসিডেন্ট হতে চলেছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। এটাই তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদ। আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। এখনও পর্যন্ত শোনা যাচ্ছে, কোনও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নেই। অর্থাৎ, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় নিশ্চিত বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনের তারিখ ২২ সেপ্টেম্বর, তবে শেষ মুহূর্তে কোনও নাটকীয় পরিবর্তন না ঘটলে মহারাজের মসনদে ফেরা নিশ্চিত। যদিও প্রেসিডেন্ট পদে সৌরভের জয় একপ্রকার নিশ্চিত, তবুও তাঁর প্যানেলে সচিব পদে কে আসছেন তা নিয়েই চলছে জোর জল্পনা। কেউ বলছেন, প্রাক্তন সচিব বাবলু কোলেকে ফিরিয়ে আনা হতে পারে। আবার অনেকেই মনে করছেন, সঞ্জয় দাসই এই পদে সবচেয়ে উপযুক্ত। কারণ, প্রশাসনিক অভিজ্ঞতার নিরিখে তিনি বাবলুর চেয়ে এগিয়ে। সঞ্জয় দাস আগেও সিএবির নানা জটিল বিষয় দক্ষতার সঙ্গে সামলেছেন। আধুনিক ক্রিকেট প্রশাসনের সঙ্গে তাঁর পরিচিতি বেশি। ফলে সচিব পদে সঞ্জয়ের নাম সামনে আসাটা অনেকের কাছেই যৌক্তিক মনে হচ্ছে। এছাড়াও, কোষাধ্যক্ষ পদে সঞ্জয়ের নামও ঘুরপাক খাচ্ছে। বর্তমানে জাতীয় ক্রীড়া আইন এখনও কার্যকর হয়নি। তাই সিএবি এবারও লোধা কমিশনের নিয়ম মেনে নির্বাচন করছে। এই পরিস্থিতিতে সৌরভ দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট পদে ফিরে আসতে পারেন কোনও বিরোধিতা ছাড়াই। তবে শুধুমাত্র নির্বাচিত হওয়া নয়, বাংলার ক্রিকেটকে ফের গড়ে তোলাই সৌরভের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলার ক্রিকেট মাঠে ও মাঠের বাইরে বহু সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে। জুনিয়র ক্রিকেটের অবস্থা, প্রতিভা গড়ে তোলা, অবকাঠামো উন্নয়ন – সব ক্ষেত্রেই ঘাটতি চোখে পড়েছে। জাতীয় স্তরে বাংলার প্রতিনিধিত্বও তেমন বাড়ছে না ।এই সব দিক মাথায় রেখেই সৌরভ ইতিমধ্যেই একটি সম্ভাব্য ‘রিস্ট্রাকচারিং’ পরিকল্পনা তৈরি করেছেন। তাঁর ভাবনায় রয়েছে জুনিয়র ক্রিকেটে বিশেষ প্রকল্প: স্কুল ও কলেজ স্তর থেকে প্রতিভা খুঁজে এনে সঠিক কোচিং ও সুযোগ দেওয়া। ক্লাব পর্যায়ে আধুনিক প্রশিক্ষণ সুবিধা, ভালো মাঠ ও প্র্যাকটিস সুবিধা তৈরি করা। আধুনিক কোচিং পদ্ধতি, ফিটনেস ও স্পোর্টস সায়েন্সকে গুরুত্ব দেওয়া। বাংলার ক্রিকেটারদের সুযোগ করে দেওয়া যাতে জাতীয় দলে আরও বেশি মুখ দেখা যায়। শহরের পাশাপাশি জেলার প্রতিভাদেরও সমান গুরুত্ব দেওয়া। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় কেবল একজন প্রাক্তন অধিনায়ক নন, তিনি বাংলার ক্রিকেটের মুখ। তাই দ্বিতীয়বার সিএবি প্রেসিডেন্ট হলে তাঁর ওপর প্রত্যাশার বোঝাও অনেক বেশি থাকবে। তিনি যদি নিজের অভিজ্ঞতা ও নেতৃত্বগুণ দিয়ে প্রশাসন চালান, তবে বাংলার ক্রিকেট ফের ঘুরে দাঁড়াতে পারে।

