রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা লুইজিনহোর

জাতীয় দলের তকমা হারানোর পর চব্বিশ ঘণ্টাও কাটল না। ফের ধাক্কা তৃণমূলে। রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিলেন গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনহো ফালেইরো। মঙ্গলবার উপরাষ্ট্রপতি এবং রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়ের কাছে নিজের পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। এর ফলে রাজ্যসভায় তৃণমূলের সাংসদ সংখ্যা দাঁড়ালো ১২ জন।
এদিকে তৃণমূলের অপর রাজ্যসভার সাংসদ জহর সরকার লুইজিনহো ফালেইরোর এই পদত্যাগের ঘটনায় জানাচ্ছেন, এই সিদ্ধান্ত লুইজিনহোর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। বলেন, ‘লুইজিনহো ফালেইরোর বহুদিন ধরে আসছিলেন না। শরীরটা খারাপ বোধ হয়। উনি আমার চেয়েও বয়সে বড়। পদত্যাগ করাটা ওনার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত।’ এদিকে সূত্রে খবর পদত্যাগ পত্রে তিনি তাঁর শারীরিক অক্ষমতাকেই তুলে ধরেছেন।
এদিকে গোয়ায় বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফালেইরোকে দলে নিয়ে বড় চমক দিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। ২০২১ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর কংগ্রেস ত্যাগ করেন তিনি। ২৯ সেপ্টেম্বর কলকাতায় এসে যোগ দেন তৃণমূলে। ওই বছরই নভেম্বর মাসে ফালেইরোকে রাজ্যসভায় পাঠায় তৃণমূল। অর্পিতা ঘোষের জায়গায় তাঁকে রাজ্যসভায় সাংসদ করা হয়৷ তাঁকে দলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতিও করা হয়।এরপর ফালেইরোর হাত ধরেই গোয়া কংগ্রেসে বড়সড় ফাটল ধরায় তৃণমূল।
তবে গোয়া বিধানসভা ভোটের মুখেই বিতর্কের সূত্রপাত। ভোটে তাঁকে প্রার্থী করা হলেও লড়তে চাননি ফালেইরো। গোয়া বিধানসভা নির্বাচনে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপালেও কার্যত বিপর্যয় ঘটে তৃণমূলের। এর পর থেকেই ফালেইরোর সঙ্গে তৃণমূল নেতৃত্বের দূরত্ব বাড়ছিল। সম্প্রতি ঘনিষ্ঠ মহলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও স্বীকার করে নেন, ফালেইরোকে রাজ্যসভায় পাঠানো তাঁদের ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। এই প্রসঙ্গে অভিষেক ফেলেইরোকে রাজ্যসভায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে এও জানান, ‘চারটে সিদ্ধান্ত নিলে তার মধ্যে একটা ভুল হতেই পারে।’ সঙ্গে তিনি এও বলেছিলেন, ‘আমরা ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েছি।’ এদিকে তৃণমূলের অন্দরের খবর, দলের মধ্যে একেবারেই নিষ্ক্রিয় ছিলেন গোয়ার প্রবীণ এই নেতা। দলীয় কর্মসূচিতেও যোগ দিতেন না তিনি। ফলে দলের ভিতরেও তাঁকে নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছিল। সূত্রের খবর, পদত্যাগের জন্য দলের পক্ষ থেকেই বার্তা দেওয়া হয়েছিল ফালেইরোকে। তবে লুইজিনহো ফালেইরোর পদত্যাগের পর তৃণমূলের পক্ষ থেকে তাঁকে ভবিষ্যৎ জীবনের শুভেচ্ছা জানানো হয়৷ একই সঙ্গে জানানো হয় যে, ফালেইরোর পদত্যাগে ফাঁকা হওয়া আসনে নির্বাচনের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি হলেই দলের তরফ থেকে নতুন প্রার্থীর নাম জানিয়ে দেবে। তবে এটাও ঠিক, সম্প্রতি অভিষেকের মন্তব্য এবং তারপর গোয়ার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুইজিনহোর রাজ্যসভার সদস্যপদ ত্যাগ স্বাভাবিকভাবেই বেশ গুঞ্জন বাড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

sixteen − 15 =