কোহলি নন, ইডেনের বিরাট ম্যাচে গম্ভীরের চিন্তার কারণ ম্যাক্সওয়েল

বিরাট কোহলির সঙ্গে গৌতম গম্ভীরের সম্পর্কটা কোনও দিনই ভাল নয়। কখনও ভাল ছিলও না। গম্ভীর খেলতেন যখন, মাঠে বিরাটের সঙ্গে আইপিএল যুদ্ধে একাধিক বার লেগে গিয়েছে। কে ভুলেছে, নাইট অধিনায়ক থাকাকালীন গম্ভীরের সঙ্গে প্রাক্তন আরসিবি অধিনায়ক কোহলির মাঠেই লেগে যাওয়া, তুমুল তর্কাতর্কি। পরবর্তী সময়ে গম্ভীর যখন খেলাটেলা ছেড়ে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞের পোশাক গায়ে চাপিয়ে নিয়েছেন, তখনও দু’জনের সম্পর্কে বিশেষ উষ্ণতা আসেনি। বরং সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ক্যাপ্টেন কোহলির সবচেয়ে কঠোর সমালোচক ছিলেন গম্ভীর!

বুধবারের ইডেনে সামনে গম্ভীর আছেন বলে কি না জানা নেই (খেলাটা আরসিবি বনাম লখনউ সুপার জায়ান্টস হলেও প্রকারান্তরে সেই কোহলি বনাম মেন্টর গম্ভীর)। কিন্তু সল্টলেকের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এদিনের বিরাট-মহড়া দেখলেন যাঁরা, পূর্বতন আরসিবি অধিনায়কের মধ্যে একটা বাড়তি তাগিদ তাঁদের চোখে পড়েছে। শোনা গেল, দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ সল্টলেক ক্যাম্পাসে দলবল নিয়ে ঢোকেন বিরাট। নেমেই সোজা চলে যান মাঠের একধারের প্র্যাকটিস উইকেটে ব্যাট নামক ব্রহ্মাস্ত্রকে ভাল করে ঝালিয়ে নিতে।

আর মারলেনও বটে বিরাট! এদিনের ট্রেনিংয়ে ব্যাটিংয়ের নামে যা করলেন কিং কোহলি, তাকে বাংলায় তাণ্ডব বলে! পরের পর বল মাঠের বাইরে ফেলে গেলেন অক্লান্ত ভাবে। কিছু খুঁজে পাওয়া গেল পরে, কিছু যায়নি। শোনা গেল, এক সময় উপস্থিতদের মধ্যে ভয় ধরে গিয়েছিল যে, কোহলি যে ভাবে মারছেন, তাতে মজুত থাকা প্র্যাকটিস বলে কুলোবে তো? আরসিবির বাকি ট্রেনিং সেশনেও যথেষ্ট ফুরফুরে দেখিয়েছে বিরাটকে। কখনও গানের তালে মৃদু নেচে উঠেছেন। কখনও লখনউয়ের অস্ট্রেলীয় অলরাউন্ডার মার্কাস স্টয়নিসের সঙ্গে দাঁড়িয়ে আড্ডা দিয়েছেন। কখনও আবার সল্টলেক যাদবপুর ক্যাম্পাসের ক্যান্টিনের সামনের গাছ দেখে উৎসুক ভাবে নাকি জিজ্ঞাসা করেছেন এটা কী গাছ? জাম?

ঘটনা হল, নেটে বিরাটের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের নমুনা শুনে গম্ভীরের ঘনিষ্ঠমহল খুব বেশি তাতে আমল দিল না। বলা হল, কোহলি নিয়ে বেশি মাথা নাকি ঘামাচ্ছেন না লখনউ মেন্টর। না, গুজরাটের বিরুদ্ধে গ্রুপ পর্বের শেষ ম‌্যাচে বিরাট আগুনে ফর্মে ফেরার পরেও নয়। যুক্তিটা অত্যন্ত কর্কশ কোহলি রানে ফিরেছেন, ঠিক আছে। কিন্তু তাঁর স্ট্রাইক রেট ১২০ থেকে ১৩০ থাকবে। অতএব কোহলি নিয়ে বাড়তি ভেবে লাভ নেই! গম্ভীরের নাকি বুধবারের ম‌্যাচে সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তা গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। গুজরাটের বিরুদ্ধে শেষ গ্রুপ লিগ ম্যাচে যিনি রুদ্রমূর্তি ধরেছিলেন। বুধবারের এলিমিনেটর যুদ্ধে ‘ম্যাড ম্যাক্স’ ফের তেড়েফুঁড়ে উঠলে, কপালে ভোগান্তি আছে বলে মনে করছেন লখনউ মেন্টর। শুনলে আশ্চর্যই লাগবে যে, গম্ভীর ইডেনের এলিমিনেটর যুদ্ধে বিরাট নন। আসল প্রতিবন্ধকতা ধরছেন ম্যাক্সওয়েলকে!

ভারতীয় ক্রিকেটের বিরাট রাজাকে নিয়ে কি না বলা হচ্ছে, তিনি অন্তত গম্ভীরের ঘুম কেড়ে নিতে পারবেন না! জানা নেই, বুধবারের ইডেন কার কপালে জয়তিলক এঁকে দেবে? বিরাট রাজার না নিজের এককালের প্রিয় ‘সন্তানের’? কিন্তু একটা জিনিস এখনই লিখে দেওয়া যায়। ইডেন আজ চলতি আইপিএলের সবচেয়ে রোমহর্ষক লড়াইটা দেখতে চলেছে। গম্ভীরের মগজাস্ত্র বনাম বিরাটের ব‌্যাট। বিরাট বনাম গম্ভীর কখনও নিরুত্তাপ যায়নি। যাবেও না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ten − nine =