এ বারের আইপিএলের শুরুটা সেই হার দিয়েই করতে হয়েছিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে। আর দ্বিতীয় ম্যাচে জয়ের সামনে এসেও তীরে এসে তরী ডুবল হায়দরাবাদের। লিগ টেবলের লাস্ট বয়ের তকমা ঘোচাতে পারলেন না উইলিয়ামসনরা। তবে আজ একটা সময় এমন জায়গায় ছিলেন রাহুল ত্রিপাঠীরা, তাতে লখনউ সুপার জায়ান্টসকে হাসতে হাসতে হারিয়ে মাঠ ছাড়তে পারত অরেঞ্জ আর্মি। কিন্তু কোথায় কী! পর পর দুটো ম্যাচে হারল হায়দরাবাদ আর পর পর দুটো ম্যাচে জিতল সুপার জায়ান্টসরা। প্রথমে ক্যাপ্টেন কেএলের অধিনায়োকচিত ৬৮ রান এবং দীপক হুডার ৫১ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস। তার পর আবেশ খান ও জেসন হোল্ডারের অনবদ্য বোলিংয়ে ভর করে ২ পয়েন্ট নিয়ে হাসিমুখে মাঠ ছাড়ল সুপার জায়ান্টসরা।
টসে জিতে শুরুতে লখনউকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিলেন হায়দরাবাদ অধিনায়ক। পাওয়ার প্লে-র মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল সুপার জায়ান্টসরা। ডি’কক (১), এভিন লুইস (১) ও মনীশ পান্ডে (১১) আজ ব্যাট হাতে ব্যর্থ। চতুর্থ উইকেটে দীপক হুডার সঙ্গে জুটি বাঁধেন লোকেশ। ৮৭ রানের লম্বা জুটি দলকে অনেকটা এগিয়ে দেয়। ৩৩ বলে ৫১ রান করে রোমারিও শেফার্ডের শিকার হন হুডা। এর পর লখনউয়ের ‘বেবি এবি’-কে সঙ্গে নিয়ে আরও ৩০ রান যোগ করেন ক্যাপ্টেন। ৫০ বলে ৬৮ রান করে টি নটরাজনকে উইকেট দিয়ে যান রাহুল। তাঁর ইনিংস সাজানো ছিল ৬টি চার ও ১টি ছয় দিয়ে। একই ওভারে ক্রুণাল পান্ডিয়ার (৬) উইকেট তুলে নেন নটরাজন। এরপর ১২ বলে ১৯ রান করে রান আউট হন আয়ুষ। এবং নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৬৯ রানে থামেন রাহুলরা।
১৭০ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো করার চেষ্টা করেছিল হায়দরাবাদের ওপেনিং জুটি। তবে সফল হয়নি। ৩.৩ ওভারে অরেঞ্জ আর্মির ক্যাপ্টেনকে ফিরিয়ে প্রথম ধাক্কা দেন আবেশ খান। ১৬ বলে ১৬ রান করে মাঠ ছাড়েন উইলিয়ামসন। দ্বিতীয় ওপেনার অভিষেক শর্মাও বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারেননি। আবেশের দ্বিতীয় শিকার হন তিনি। ১১ বলে ১৩ রান করে যান অভিষেক। এরপর তৃতীয় উইকেটে এইডেন মার্করামের সঙ্গে জুটি বাঁধেন নাইট প্রাক্তনী রাহুল ত্রিপাঠী। ৩০ বলে গুরুত্বপূর্ণ ৪০ রান করে যান রাহুল। ক্রুণাল ফেরান রাহুলকে। পাশাপাশি তিনি তুলে নেন মার্করামের উইকেটও। শেষের দিকে নিকোলাস পুরান ও ওয়াশিংটন সুন্দরের জুটিতে ৪৮ রান ওঠে।
তবে ম্যাচ গড়ায় সেই টানটান শেষ ওভারে। বল ৬টা, রান প্রয়োজন ১৬। ক্রিজে ওয়াশিংটন সুন্দর ও রোমারিও শেফার্ড। লক্ষ্যে পৌঁছনোটা খুব একটা কঠিন ছিল না নিজামের শহরের দলের কাছে। কিন্তু শেষ ওভারে জেসন হোল্ডারের হাতে বল তুলে দিয়েছিলেন কেএল। শেষ ওভারের প্রথম বলেই ছন্দে থাকা ওয়াশিংটন সুন্দরের উইকেট তুলে নিলেন হোল্ডার। পরের দুটো বলে সিঙ্গল নিলেন ভুবি। চার নম্বর বলে হোল্ডারকে উইকেটটা দিয়ে বসলেন ভুবনেশ্বর। পাঁচ নম্বর বলে ১ রান নিলেন উমরান। আর এখানেই শেষ নয়। শেষ ওভারের শেষ বলে রোমারিও শেফার্ডকেও আউট করেন হোল্ডার। ফলে ১২ রানে লোকেশদের কাছে হারতে হল হায়দরাবাদকে। ৪টে উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা হয়েছেন আবেশ খান। শেষ ওভারে হোল্ডারের তিন উইকেটও কম প্রশংসার নয়। এরপর হায়দরাবাদের ম্যাচ ৯ এপ্রিল। জাডেজাদের বিরুদ্ধে জিতে হারের হ্যাটট্রিক আটকানোতেই লক্ষ্য থাকবে অরেঞ্জ আর্মির।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: লখনউ ১৬৯-৭ (লোকেশ রাহুল ৬৮, দীপক হুডা ৫১, টি নটরাজন ২-২৬, ওয়াশিংটন সুন্দর ২-২৮)। হায়দরাবাদ ১৫৭-৯ (রাহুল ত্রিপাঠী ৪৪, নিকোলাস পুরান, আবেশ খান ৪-২৪, জেসন হোল্ডান ৩-৩৪, ক্রুণাল পান্ডিয়া ২-২৭)