‘লিভ ইন সম্পর্ক’, সমাজে এখনও ব্যাঁকা চোখে দেখলেও, আইন দিয়েছে কিছু স্বীকৃতি

সম্প্রতি মৃত্যু হয়েছে অভিনেত্রী পল্লবী দের। তিনি লিভ-ইন সম্পর্কে ছিলেন। সমাজ একে ব্যাঁকা চোখে দেখলেও, বিভিন্ন সময় আদালত কিন্তু এই সম্পর্কের পক্ষেও কথা বলেছে।কয়েক বছর আগেই একটি মামলার প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয়, প্রাপ্তবয়স্ক যে কোনও যুগলের ‘লিভ টুগেদার’ করার অধিকার রয়েছে। সেই মামলায় একই সঙ্গে এটাও বলা হয় যে, ২১ বছর বয়স হওয়ার আগে পুরুষের বিয়ে আইনত বৈধ নয়। কিন্তু সেই তরুণ যদি লিভ-ইন সম্পর্কে থাকে তবে তা বৈধ।

জানা গিয়েছ, এমনই একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন এক তরুণ। বয়স ২১-এর কম হওয়ায় ওই তরুণের বিয়েকে অবৈধ বলে কেরল হাই কোর্ট। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যান যুবক। সেখানে গিয়ে বিয়ের বৈধতা আদায় করেন তিনি। ২০১৮ সালের মে মাসে বিচারপতি এ কে সিক্রি এবং বিচারপতি অশোক ভূষণের বেঞ্চ বলে, বিয়ে অবৈধ হলেও কোনও প্রাপ্তবয়স্ক যুগল একসঙ্গে থাকতেই পারেন। সেই অধিকার তাঁদের আছে।

সমাজ যাই বলুক না কেন, আইনের চোখে লিভ-ইন সম্পর্কের অন্য স্বীকৃতিও রয়েছে। মহিলাদের সুরক্ষার জন্য যে সব আইন রয়েছে তা বিয়ের পাশাপাশি লিভ-ইন সম্পর্কে থাকলেও পাওয়া যায়। আদালতই জানায় যে, লিভ-ইন সম্পর্ককে গার্হস্থ্য হিংসা রোধ আইন (২০০৫)-এর আওতায় স্বীকৃতিও দেওয়া হয়েছে। বিবাহবিচ্ছেদের মতো লিভ-ইন সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার পরেও এক জন মহিলা খোরপোশের দাবিদার হতে পারেন। সন্তানদের ক্ষেত্রেও উত্তরাধিকার-সহ অন্যান্য আইন এক।

তবে আদালতে এমন সম্পর্ক নিয়ে উল্টো কথাও শোনা গিয়েছে। ২০২১ সালেই ‘লিভ-ইন সম্পর্ক নীতিগত ও সামাজিক ভাবে গ্রহণযোগ্য নয়’ জানিয়ে এক যুগলের নিরাপত্তা সংক্রান্ত মামলা খারিজ করে পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট।

ইদানীং তরুণ প্রজন্ম লিভ ইন-এ বেশি বিশ্বাসী হয়ে উঠছে। বিয়ের মতো প্রতিষ্ঠানকে অর্থহীন আর সময়ের অপচয় ছাড়া আর কিছুই মনে করেন না তাঁরা। তাঁদের মতে ‘বন্ডিং’টাই বড় কথা—সে লিভ ইন হোক কি বিয়ে। অনেকে অল্প সময়ের জন্য হলেও আলাদা আলাদা শহরে থাকছেন, যাতে পরের বার দুজনের মধ্যে দেখা করার বাসনা প্রবল হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 − 2 =