দেশের জার্সিতে বিশ্বকাপের ফাইনালই তাঁর শেষ ম্যাচ। তারপর আর নীল-সাদা জার্সি গায়ে চাপাবেন না তিনি। ফিফাকে এমনটাই জানিয়ে দিলেন লিওনেল মেসি। মঙ্গলবারই ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়ে আরও একবার বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌঁছেছে আর্জেন্টিনা। সতীর্থদের এই ঐতিহাসিক মুহূর্তকে উপভোগ করার পরামর্শও দেন মেসি। কিন্তু তারপরই তাঁর হৃদয়বিদারক সিদ্ধান্তের কথা সামনে এল। শোনা যাচ্ছে নিজের অবসরের সিদ্ধান্ত ফিফাকে জানিয়ে দিয়েছেন এলএম টেন। বলেন, আগামী ১৮ ডিসেম্বরই শেষবার দেশের হয়ে খেলতে নামবেন। আর্জেন্টাইন মহাতারকার কথায়, “বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ খেলে নিজের সফর শেষ করতে চাই। এতদূর পৌঁছতে পেরে ভীষণ ভাল লাগছে।”
চলতি বিশ্বকাপে ইতিমধ্যেই পাঁচটি গোল করে সোনার বুটের দৌড়ে রয়েছেন মেসি। সেই সঙ্গে ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে পেনাল্টি থেকে গোল করে বিশ্বকাপে দেশের সর্বোচ্চ গোলদাতার মালিকও হয়ে গিয়েছেন তিনি। ২৫ ম্যাচে তাঁর ঝুলিতে ১১টি গোল। পিছনে ফেলে দিয়েছেন কিংবদন্তি গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতাকে। কিন্তু এবারের ফাইনালই দেশের হয়ে তাঁর আন্তর্জাতিক কেরিয়ারের শেষ মঞ্চ। ৩৪ বছরের এলএম টেন বলে দিচ্ছেন, “পরের বিশ্বকাপের এখনও অনেকটাই দেরি। মনে হয় না তখন আর খেলতে পারব। তাই এভাবে শেষ করাই ভাল।”
ক্লাব ফুটবলে দুর্দান্ত মেসি। কিন্তু দেশের জার্সিতে তিনি ফ্লপ। ২০১৪ সালে বিশ্বকাপ ফাইনালে হার এবং ২০১৬-তে কোপা আমেরিকার ফাইনালে পৌঁছেও ট্রফি হাতছাড়া করে এভাবেই সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল মেসিকে। তাঁর দেশের মানুষই তাঁর অবসরের পক্ষে সুর চড়িয়েছিলেন। সেই সময় হতাশায় নিমজ্জিত মেসি অবসর ঘোষণাও করে দিয়েছিলেন। কিন্তু ফের অবসর ভেঙে গায়ে চাপিয়ে নেন জার্সি। ঘুরে দাঁড়ান। ধরা দেন স্বমেজাজে। দেশকে কোপা জিতিয়ে নজির গড়েন। আর এবার অনবদ্য ফর্মে ধরা দিয়ে বিশ্বকে নিজের ম্যাজিক মোহিত করে পৌঁছে গেলেন ফাইনালে। বিশ্বজয় করে কি মধুরেণ সমাপয়েত হবে? উত্তর মিলবে ১৮ ডিসেম্বর রাতে। তবে বছরের পর বছর দেশকে তিনি যে ফুটবল শিল্প উপহার দিয়েছেন, তা-ই বা কম কী। বিশ্বজুড়ে ফুটবলার তো অনেক আছেন। মেসিকে তো আর্জেন্টিনারই। এই গর্বই বা কম কীসের।