‘আমাকে বাঁচতে দিন’, জামিনের আর্জি জানিয়ে শুনানিতে কেঁদে ফেললেন পার্থ

কলকাতা: জামিন পেতে মরিয়া এসএসসি নিয়োগে দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বুধবার ভারচুয়ালি আদালতে হাজিরার সময় কেঁদে ফেললেন তিনি। ধরা গলায় আর্জি জানালেন, ‘আমাকে জামিন দিন।বাঁচতে দিন।’ একইসঙ্গে উদ্ধার হওয়া সম্পত্তির সঙ্গে তাঁর নয় বলে দাবিও করলেন। এদিন আদালতে ইডির আইনজীবীরা জানান, পার্থ-অর্পিতার প্রায় ১০০ কোটি টাকার সম্পত্তির হদিশ মিলেছে। কিন্তু এই সম্পত্তির সঙ্গে তাঁর কোনও যোগাযোগ নেই বলে দাবি করেছেন পার্থ। তাঁর কথায়, “ইডি আধিকারিকরা আমার বিধানসভা কেন্দ্রে এসে দেখুন, আমি কে, আমার পরিবার কী, এত টাকা নিয়ে আমি কী করব? কোথা থেকে আসবে এত টাকা?” এরপরই আদালতে কেঁদে ফেলেন তৃণমূলের প্রাক্তন মহাসচিব। ধরা গলায় বলেন, ‘প্রয়োজনে আমাকে ঘরে আটকে রাখুন। বাড়িতে বন্ধ করে রাখুন। কিন্তু আমাকে বাঁচতে দিন।জামিন দিন।’ এদিন ভারচুয়ালি হাজির করা হয়েছিল পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কেও। আদালতে তিনি জানান, তাঁর ফ্ল্যাটে টাকা কোথা থেকে এল, তা তিনি জানেন না। অর্পিতা বলেন, ‘ইডি যখন আমার ফ্ল্যাটে হানা দেয় ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা আমি বেরতেই পারিনি। আমি ৪ ঘণ্টা ছিলাম বাথরুমে। বাকি সময় বেডরুমে ছিলাম। এত নগদ টাকা কী করে বের হল জানি না।’ বাড়ির মালিক হওয়া সত্ত্বেও ফ্ল্যাটে থাকা নগদ সম্পর্কে জানতেন না, অর্পিতার এমন দাবিতে বিস্ময় প্রকাশ করেন বিচারপতি। বলেন, ‘আপনার ফ্ল্যাট অথচ সেখানে টাকা কীভাবে এল তা জানতেন না?’ জবাবে অর্পিতা জানান, আমার নামে দু’টি এন্টারটেইনমেন্টের সংস্থা আছে। সেখান থেকেই আয়। এরপর মায়ের কথা উল্লেখ করেন অর্পিতা। বলেন, ‘মায়ের বয়স হয়েছে। বাবা চলে গিয়েছেন অনেকদিন।’ বিচারপতি জানতে চান, অর্পিতা তাঁর মায়ের সঙ্গে থাকেন কি না। জবাবে পার্থর বান্ধবী জানান, ‘কর্তব্যের খাতিরে আমাকে দক্ষিণ কলকাতায় থাকতে হয়। ওখানে আমার কাজকর্ম।’ মায়ের কাছে না থাকলে, মায়ের কথা বলে জামিন চাইছেন কেন, অর্পিতার কাছে জানতে চান বিচারপতি। মায়ের অসুস্থতার যুক্তি দেন অর্পিতা। তবে এদিন তাঁর আইনজীবী জামিনের আরজি জানাননি।

বুধবার ফের ইডি পার্থ-অর্পিতা দু’জনকে আবার জেল হেপাজতে পাঠানোর আবেদন করেছে আদালতে। তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবীর বক্তব্য, বহু বেআইনি লেনদেনের হদিস মিলেছে। মিলেছে বেশ কিছু কাগুজে সংস্থার হদিসও। তার মাধ্যমেই কালো টাকা সাদা করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত যে শতাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সন্ধান মিলেছে, তা উল্লেখ করে ইডির আইনজীবী জানান, এই সময় জেলে গিয়ে পার্থ ও অর্পিতাকে জেরা করা ভীষণই জরুরি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − eight =