প্রিপেইড স্মার্ট মিটার বাতিলের দাবিতে বিদ্যুৎ বিভাগের সামনে বামেদের বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদন, অণ্ডাল: রাষ্ট্রায়ত্ত্ব বিদ্যুৎক্ষেত্র সম্পূর্ণ বেসরকারিকরণের লক্ষে অবৈধ প্রিপেড স্মার্ট মিটার প্রকল্প অবিলম্বে বাতিলের দাবিতে বামেরা বিক্ষোভ দেখায় উখড়া বিদ্যুৎ অফিসের সামনে।
দামোদর অজয় নর্থ এরিয়া সমন্বয় কমিটির আহবায়ক অঞ্জন বক্সির দাবি, ‘বর্তমান আইনের সমস্ত বিধান লঙ্ঘন করে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ মেনে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নির্দেশে পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ বিতরণ নিগম পরিষেবিত এলাকায় একতরফা সিদ্ধান্তে প্রিপেড স্মার্ট মিটার বসানো হচ্ছে। যার ব্যয় চাপানো হবে গ্রাহকের মাশুলের ওপরে। এই প্রিপেড স্মার্ট মিটার প্রকল্প যার মূল লক্ষ্য সরকারি বিদ্যুৎ ক্ষেত্রকে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার আমরাবিরোধিতা করছি।’
তিনি আরও বলেন, এই প্রিপেড স্মার্ট মিটার লাগু হলে ভবিষ্যতে সাধারণ মানুষ তার বিদ্যুতের অধিকার হারাবে, আর্থ- সামাজিক পরিষেবা থেকে বিদ্যুৎ পরিণত হবে বাজারি পণ্যে। ফাটকা বাজারের মাধ্যমে আগামী দিনে বিদ্যুতের মাশুল বাড়ার ফলে বিদ্যুৎ মধ্যবিত্ত ও গরিব মানুষের ধরা ছাঁয়ার বাইরে বেরিয়ে যাবে। দিনের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মাশুল হওয়ার ফলে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনের সময় বিদ্যুতের সর্বোচ্চ মূল্য দিতে হবে। আরেকদিকে এই প্রিপেড স্মার্ট মিটার লাগু হলে সরাসরি কাজ হারাবেন বহু অস্থায়ী ও ঠিকা প্রথায় নিযুক্ত কর্মীরা। এই প্রিপেড স্মার্ট মিটার প্রকল্পের প্রযুক্তিগত, কারিগরি ও আর্থিক নিয়ন্ত্রণ সম্পূর্ণভাবে থাকবে বেসরকারি সংস্থার হাতে।

উল্লেখ্য, বর্তমান আইনের পরিসরে কেরলের সরকার কেন্দ্রীয় সরকারকে জানিয়ে দিয়েছে গরিব মানুষের স্বার্থ রক্ষার্থে এই প্রকল্প রূপায়িত হবে না। জনগণের অর্থে গড়ে তোলা সরকারি পরিকাঠামো ব্যবহার করে বেসরকারি সংস্থা এক টাকা বিনিয়োগ না করে বিদ্যুতের ব্যবসা করবে। বিপুল মাশুল বৃদ্ধির ফলে গরিব মানুষ এবং গ্রামের মানুষ বিদ্যুতের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে। খাদ্য ও কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হয়ে বৃদ্ধি হবে ক্ষুধা ও দারিদ্র। তাই বেশ কয়েক দফা দাবি রেখে উখড়া বিদ্যুৎ বিভাগের আধিকারিকের হাতে স্মারকলিপি তুলে দিল বাম নেতৃত্ব।
দাবিগুলি হল ১) অবিলম্বে জনস্বার্থ বিরোধী প্রিপেড স্মার্ট মিটার প্রকল্প বাতিল করতে হবে।
২) বিদ্যুৎ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী বাতিল করতে হবে।
৩) পারস্পরিক ভর্তুকি প্রথা বজায় রাখতে হবে।
৪) বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানের সরকারি নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে হবে। কোনও অংশ বেসরকারি হাতে দেওয়া চলবে না। যদিও এই বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের দপ্তরের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

15 − 9 =