লক্ষ্মীপুজোয় ‘হক’-এর চাকরির কাতর আবেদন জীবন্ত লক্ষ্মীদের

কলকাতা: শহরজুড়ে উৎসবের রেশ। সবে শেষ হয়েছে দুর্গাপুজো। রবিবার ঘরে ঘরে চলছে কোজাগরী লক্ষ্মীর পুজো। উৎসব আবহেও, ওঁরা ব্রাত্যই রয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের দিকে ফিরেও তাকাচ্ছে না কেউ। তাই এবার লক্ষ্মীর সাজে প্রতীকি প্রতিবাদ ধর্মতলায় চাকরিপ্রার্থীদের ধরনা মঞ্চে। বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের একটাই দাবি, নিয়োগপত্র হাতে না পেলে ধরনামঞ্চ থেকে সরবেন না। তাই রবিবার কোজগরী লক্ষ্মীপুজোর দিনে সেই ধরনামঞ্চে দেবী লক্ষ্মীর আরাধনা করলেন আন্দোলনকারীরা। কোথাও চাকরিপ্রার্থীকে জীবন্ত লক্ষ্মী সাজিয়ে দেবীর আরাধনা করলেন তাঁরা। কোথাও আবার সাদা কাগজ রেখে চলল পুজো। কেউ আবার দেবীর মৃন্ময়ী মূর্তি হাতে নিয়ে দিলেন ধরনা। সবমিলিয়ে দুর্গাপুজোর পর কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোতেও হৃদয় বিদারক দৃশ্য চোখে পড়ল ধর্মতলার ধরনা মঞ্চ চত্বরে।
ধরনার ৫৭৪ দিন কেটে গিয়েছে। আদালত রায় দিয়েছে। তবু হাতে আসেনি চাকরির নিয়োগপত্র। কেউ ৫ বছর তো কেউ তিন বছর ধরে চাকরির অপেক্ষায়। নিয়োগপত্রের দাবিতে রোদ-ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে আন্দোলন করছেন যোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁদের মধ্যে কেউ বা প্রাইমারি টেট উত্তীর্ণ কারোর নাম রয়েছে নবম-দশম-একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের তালিকায়। বঞ্চিত এসএসসির গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডির চাকরিপ্রার্থীরাও। কেউ গান্ধীমূর্তির পাদদেশে, তো কেউ মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির পাদদেশে আন্দোলন করছেন। কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর দিনও ধরনা মঞ্চ ছাড়েননি তাঁরা। বরং এদিন ধরনামঞ্চগুলিতে চোখে পড়ল অন্য ছবি। চারটি ধরনামঞ্চে চাররকমভাবে আরাধনা হল ধনদাত্রীদেবীর। মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির নীচে ধরনা দিচ্ছেন ২০১৪ সালের প্রাইমারি টেট উত্তীর্ণ নট ইনক্লুডেড চাকরিপ্রার্থীরা। কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোয় সেই ধরনামঞ্চেই লক্ষ্মীর আরাধনা করলেন তাঁরা। এদিন এক আন্দোলনকারীকে লক্ষ্মীবেশে সাজানো হয়। হাতে ছিল পদ্মফুল ও ধানের ছড়া। সমস্ত নিয়মনীতি মেনেই তাঁকে পুজো করা হল এদিন। হাতের প্ল্যাকার্ডেও ছিল অন্যরকমের স্লোগান। কোথাও লেখা, ‘এসো মা লক্ষ্মী বসো আমাদের ধরনামঞ্চে’। কোথাও আবার, মা লক্ষ্মীর কাছে নিয়োগপত্রে দাবি জানিয়ে লেখা হয়েছে প্ল্যাকার্ড। চাকরিপ্রার্থীরা সাফ জানানলেন, এবার নিয়োগপত্র না পেলে আমরণ অনশন নয়তো স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদনের পথে হাঁটবেন তাঁরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

16 − 14 =