এমবাপের আচরণে ক্ষুব্ধ ফিফা, পড়তে চলেছেন বড় জরিমানার মুখে

নিঃসন্দেহে লেখার শুরুটা এভাবে করাই যেত, ‘এমবাপেকো গুসসা কিঁউ আতা হ্যায়?’ এবারের বিশ্বকাপে একটা জিনিস ভীষণভাবেই লক্ষ্য করছি। প্রত্যেক দেশের তারকা ফুটবলারের সঙ্গেই তাঁদের দেশজ মিডিয়ার সম্পর্কটা অহি-নকুলের। বিশ্বকাপ চলাকালীন দেশজ মিডিয়াকে এড়িয়ে থাকতে চাইছেন তাঁরা। দোহায় পা দেওয়ার পর থেকে একবারও মিডিয়ার সামনে আসেননি নেইমার। আর বিশ্বকাপে মিডিয়াকে এড়িয়ে চলার তালিকায় প্রথম নামটা অবশ্যই এমবাপের। নেইমারের না হয় চোট-সহ নানা কারণ রয়েছে। কিন্তু এমবাপে কেন এরকমন আচরণ করছেন?

গ্রুপ লিগের পর পর দুটো ম্যাচেই গোল করে ম্যাচের সেরা তিনি।আর বিশ্বকাপে ফিফার নিয়ম হল, ম্যাচের পর কোচের সঙ্গে ম্যাচের সেরাকে সাংবাদিক সম্মেলনে আসতে হবে। অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে গোল করে ম্যাচের সেরা হওয়ার পরেও তিনি কোচ দিদিয়ের দেশঁর সঙ্গে সাংবাদিক সম্মেলনে আসেননি। যা গর্হিত অপরাধ। সঙ্গে সঙ্গে এমবাপেকে নিয়ে সতর্ক করে ফ্রান্স ফুটবল ফেডারেশনকে কড়া চিঠি পাঠায় ফিফা। জানিয়ে দেয়, এরকম অপরাধ ফের হলে এবার শাস্তির মুখে পড়বেন এমবাপে।

কিন্তু তারকারা আর কবে কার কথা শুনে চলেছেন? তারকারা চলেন নিজেদের ইচ্ছেমতো। ছোটবেলায় নিজের সারা ঘরে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর ছবি সাজিয়ে রাখতেন এমবাপে। পর্তুগিজ তারকা ছিলেন তাঁর স্বপ্নের নায়ক। আর দেখুন, বিশ্বফুটবল থেকে রোনাল্ডোর প্রস্থানের সময় ফুটবল বিশেষজ্ঞরা বলতে শুরু করেছেন, রোনাল্ডো চলে যাচ্ছেন। রেখে যাচ্ছেন এমবাপেকে। আর তাই হয়তো রোনাল্ডোর মতোই ডাকাবুকো, কারও কথায় চলার বান্দা নন তিনি। নাহলে শাস্তি হবে জানিয়ে ফিফার তরফে এরকম কড়া সতর্কতামূলক চিঠি আসার পরেও নিজেকে বদলাবেন না তিনি?

নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচ ডেনমার্কের বিরুদ্ধেও করলেন ২ গোল। স্বাভাবিক কারণেই ম্যাচের সেরা। ফ্রান্সের টিম ম্যানেজমেন্ট অনেক অনুরোধ করেও এমবাপেকে পাঠাতে পারল না সাংবাদিক সম্মেলনে। কোচ দিদিয়ের দেশঁ অনেক অনুরোধ করেছিলেন, সংবাদমাধ্যমের উপর থেকে রাগ কমানোর জন্য। কিন্তু তাঁর পরিষ্কার যুক্তি। মাঠের ভিতর কোচের পরামর্শ অবশ্যই শুনবেন। কিন্তু মাঠের বাইরে তাঁর জীবন চলবে তাঁরই সিদ্ধান্তে। অতএব ম্যাচের পর গোঁসা করে বসে রইলেন ড্রেসিংরুমে। এলেন না সাংবাদিক সম্মেলনে। আর এতেই চটেছে ফিফা। ফিফার নিয়মভঙ্গ করার জন্য বড় আর্থিক জরিমানা করা হবে এমবাপেকে। সিদ্ধান্ত জেনেও নির্বিকার এমবাপে।

এখানেই শেষ নয়। মিডিয়ার উপর এমবাপের রাগের আরও একটা কারণ শোনা গেল। এই মুহূর্তে নিজের ক্লাব পিএসজির সঙ্গে নাকি এমবাপের সম্পর্ক একদমই তলানিতে। এমবাপে সামনের মরশুমে দল ছাড়ছেন, একদম নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি ইপিএলে খেলার জন্য লিভারপুলের সঙ্গে নাকি কথাবার্তা একদমই পাকা। এই খবরও জানতে বাকি নেই ফ্রান্সের সংবাদ মাধ্যমের। ফলে যে মুহূর্তে তিনি সাংবাদিক সম্মেলনে আসবেন, পিএসজি ছাড়া নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করে বিব্রত করতে পারেন সাংবাদিকরা। ফলে একটা বিরক্তিকর পরিস্থিতির সামনে পড়ে যেতে পারেন তিনি। যেহেতেু বিশ্বকাপে ঠিকঠাক ফর্মে রয়েছেন, তাই তিনি চাইছেন না, এই মুহূর্তে তাঁকে কেউ পিএসজির সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে জিজ্ঞাসা করুক। সেই কারণেই ফিফার জরিমানা সামলানো তবুও ঠিক আছে। কিন্তু মিডিয়ার সামনে আসবেন না তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 − 3 =