রাজ্যের মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার হুঁশিয়ারির পর এবার পাল্টা হুঁশিয়ারি কুড়মি নেতা অজিত মাহাত-এর। অজিত মাহাত স্পষ্ট জানান, ‘কুড়মি নেতাদের গ্রেপ্তার করে সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরি করলে ছেড়ে কথা বলব না।’ পাশাপাশি এও জানান, শুক্রবারের ঘাঘড় ঘেরার কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না কুড়মিরা।
বস্তুত, শুক্রবার সন্ধেয় তৃণমূলের ‘নব জোয়ার’ কর্মসূচি থেকে ফেরার পথে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার কনভয়ে হামলার অভিযোগ ওঠে কুড়মি আন্দোলনকারীদের একাংশের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনায় শনিবার সকালেই চারজনকে আটক করে পুলিশ। তবে হামলাতে যে কোনওভাবেই কুড়মিরা জড়িত নন তা বারবার দাবি করেন আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ। এমনকী আসল ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তেরও দাবি জানান তাঁরা। শনিবার এই প্রসঙ্গে অজিত মাহাত জানান, ‘শুক্রবার যেটা হয়েছে দুঃখজনক ঘটনা। আমাদের কোনও লোক ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। অথচ আদিবাসী কুড়মি সমাজের নাম করা হচ্ছে। এরপর আমাদের কোনও কর্মীকে গ্রেপ্তার করে সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরি করতে চায় আমরা ছেড়ে কথা বলব না। আমরাও সেইভাবে তৈরি হব। ঘটনার নিন্দা করছি। তবে সঠিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি। আদিবাসী কুড়মি সমাজের কেউ ঘাঘড় ঘেরা কর্মসূচিতে ছিল না। ঘাঘড় ঘেরার সঙ্গে আমাদের কর্মসূচির কোনও সম্পর্ক নেই।’
এরই পাশাপাশি শনিবার কুড়মি আন্দোলনকারীরা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তাঁদের আন্দোলন চলবেই। কোনও ভাবেই এই আন্দোলন তাঁরা বন্ধ করবেন না বলেও স্পষ্ট হুঁশিয়ারিও দেন। এই ঘটনা প্রসঙ্গে আদিবাসী কুড়মি সমাজের রাজ্য যুব সভাপতি পরিমল মাহাত জানান, ‘বীরবাহার উপর হামলার ঘটনার কোনও ভিডিয়ো ফুটেজ আমার দেখিনি। ওনার উপর কে হামলা চালালো তা উনি নিজেই বলতে পারবেন। এই ঘটনার সঙ্গে আমাদের আন্দোলনকারীদের কেউ যুক্ত নয়। আর যদি কেউ করেও থাকে তার সঠিক তদন্ত দাবি করছি।‘ আদিবাসী কুড়মি সমাজের খাতড়া ব্লক সভাপতি কৃষ্ণ মাহাতও জানান, ‘এমন ঘটনার নিন্দা করছি এবং পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। তবে আমাদের চলবে।’
অপরদিকে, সংগঠনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক সঞ্জয় মাহাতর বক্তব্য, ‘এত পুলিশ প্রশাসন থাকার পরও কে হামলা করল তার তদন্ত হওয়া অবশ্যই উচিত। নয়তো এটা চক্রান্ত। আমরা এতদিন ধরে আন্দোলন করছি। সরকারি কোনও কিছুই ভাঙচুর হয়নি। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে কালিমালিপ্ত করতেই এই ঘটনা। আর বীরবাহা হাঁসদা, দুলাল মুর্মুরা কুড়মি আন্দোলনকারীদের রাস্তায় বেঁধে পেটানোর নিদান দিচ্ছেন। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে এটা পরিকল্পিত চক্রান্ত। আমাদের আন্দোলনের মোড় ঘোরাতে এটা একটা নাটক মাত্র।’
এদিকে শুক্রবার রাতে গড় শালবনিতে ঢোকার সময় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ে হামলার ঘটনায় সরকারি সম্পত্তি নষ্টের অভিযোগে পিডিপিপি ধারায় মামলা রুজু হয়েছে ইতিমধ্যেই। একইসঙ্গে খুনের চেষ্টার অভিযোগে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৭ ধারায় মামলা করা হয়েছে, যা জামিন অযোগ্য। অন্যদিকে, অভিযোগ দায়ের করা হয় মন্ত্রী বীরবাহার তরফ থেকেও।