আগামী ২০ এপ্রিল পর্যন্ত জেল হেপাজত কুন্তল, তাপস,নীলাদ্রির

বৃহস্পতিবার নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় বৃহস্পতিবার আদালতে পেশ করা হয় কুন্তল ঘোষ, তাপস চট্টোপাধ্যায় ও নীলাদ্রি ঘোষকে। আগামী ২০ এপ্রিল পর্যন্ত জেল হেপাজতের নির্দেশ দেওয়া হয় তিনজনকে।
এদিকে আদালত সূত্রে খবর, যাঁদের টাকা দেওয়া হয়েছে, তাঁদের দ্রুত সামনে আনার কথা বললেন বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক অর্পণ চট্টোপাধ্যায়। সিবিআই-এর তদন্তকারী অফিসারকে তদন্ত ত্বরান্বিত করার পরামর্শও দেন তিনি। কারণ, নিয়োগ দুর্নীতে তদন্ত চলছে প্রায় এক বছর ধরে। এতদিনে এটুকু স্পষ্ট হয়েছে যে দুর্নীতিতে একদল টাকা নিয়েছেন চাকরি প্রার্থীদের কাছ থেকে আর এক দলকে সেই টাকা দেওয়া হয়েছে। বিচারক এদিন শুনানির সময় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই-কে প্রশ্ন করেন, টাকা যাদের কাছে গিয়েছে, তাদের থেকে টাকা উদ্ধার হয়েছে কি না তা নিয়েও। এরই পাশাপাশি তিনি এও জানতে চান, ব্যাঙ্কের থেকে নথি পাওয়া না গেলে বা ব্যাঙ্ক সাহায্য না করলে আদালতে অভিযোগ করা হচ্ছে না কেন তা নিয়েও।
একই সঙ্গে বিচারক ওয়াসিম আক্রম, সিবিআই-এর তদন্তকারী অফিসার ওয়াসিম আক্রমকে মজার ছলে বলেন, স্পিন ছেড়ে এবার স্পিড বল করতে। পাশাপাশি মনে করিয়েও দেন, ওয়াসিম আক্রম স্পিড বল করতেন। এদিকে চাকরি নিয়ে যে দরাদরি চলত, সেই তথ্য আগেই উঠে এসেছে তদন্তে। কোন চাকরির কত দর, অনেক ক্ষেত্রে সেই হিসেবও এসেছে তদন্তকারীদের হাতে। এবার এদিন সিবিআইয়ের তরফ থেকে জানানো হয়, টেটে প্রাপ্ত নম্বরের ওপর ভিত্তি করেও ঠিক হত প্রাথমিকের চাকরির দর। বৃহস্পতিবার নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানিতে এই তথ্য উল্লেখ করেছেন সিবিআই-এর আইনজীবী। দুর্নীতি যে কতটা সংগঠিত ছিল, মোডাস অপারেন্ডি কী ছিল, তা বোঝানোর জন্যই এই তথ্য তুলে ধরে সিবিআই। এদিন পর্যাপ্ত নথি সংগ্রহ করার জন্য প্রশংসা করেন বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক অর্পণ চট্টোপাধ্যায়। এদিকে এদিনের শুনানিতে সিবিআই-এর আরও দাবি, এ ক্ষেত্রে দুটো পিলার আছে। একটি পিলার টাকা নিয়েছে, আর একটি পিলার যেখানে টাকা দেওয়া হয়েছে, মাঝে রয়েছে একটা অংশ যারা টাকা দিয়েছে। সেই পিলার জোড়ার করার কাজ করা হচ্ছে বলেই এদিন আদালতে জানায় সিবিআই।
এদিকে কুন্তল ঘোষের আইনজীবীর দাবি, এই অভিযোগ বৃহত্তর ষড়যন্ত্র। শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে ছেলেখেলা হয়েছে বলে মন্তব্য করে তিনি প্রশ্ন তোলেন, সিবিআই আর কী তথ্য সামনে এনেছে তাও জানতে চান তিনি। পাশাপাশি জানান, কুন্তলের পা ফুলেছে। তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করার আর্জিও এদিন জানান তিনি। । একই সঙ্গে জেলে জেরা করার সময় আইনজীবীদের উপস্থিতির আর্জিও জানানো হয়। এই প্রসঙ্গে সিবিআই-এর আইনজীবী জানান, ‘কুন্তলের আইনজীবী আদালতে মেনে নিচ্ছেন টাকা নেওয়ার কথা। আমরা সেটাই তো তদন্ত করছি।’
এদিকে তাপস মণ্ডলের তরফে আইনজীবী জানান, ‘সিবিআই বলছে, অযোগ্যদের থেকে টাকা নিয়ে সরকারি অফিসারদের প্রভাব খাটিয়ে চাকরি দেওয়া হয়েছে। সিবিআই-এর এই বক্তব্যের সঙ্গতি নেই। আমি আমার মক্কেলের জামিন চাইছি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × 5 =