কলকাতা: নিয়োগ ‘দুর্নীতি’ মামলায় গ্রেপ্তার কুন্তল ঘোষকে জেরা করা শুরু করল ইডি। বৃহস্পতিবার আলিপুরে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে গিয়ে কুন্তল ঘোষকে জেরা করেন দুই আধিকারিক।
কুন্তল ঘোষের বক্তব্য প্রথম থেকেই আলাদা গুরুত্ব দিয়ে দেখছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। নিয়োগে বেনিয়ম ও কোটি কোটি টাকার লেনদেনে কুন্তলের যোগও স্পষ্ট বলেই ইডি সূত্রে দাবি। সেই তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে জেল হেপাজতে থাকা তৃণমূলের যুব নেতাকে জেরা করতে সংশোধনাগারে যান আধিকারিকরা।
ইডি সূত্রে খবর, এর আগে কুন্তল যখন ইডির হেপাজতে ছিল, সেই সময় তাঁর কাছ থেকে একাধিক প্রশ্নের উত্তর ইডি পায়নি। এরপরই গত ৩ ফেব্রুয়ারি কুন্তলকে আদালতে তোলা হলে ইডির আধিকারিকরা বিষয়টি বিচারককে জানান। তাঁরা আবেদন করেন, জেলে গিয়ে জেরার যেন অনুমতি দেওয়া হয়। আদালতের অনুমতি পাওয়ার পর ইডি কাজ শুরু করে।
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত তাপস মণ্ডল গ্রেপ্তার হওয়ার পর কুন্তলের নাম উঠে আসে। সিবিআইয়ের দাবি, বেসরকারি কলেজ সংগঠনের নেতা তাপস মণ্ডলই ‘নিয়োগ-দুর্নীতি’তে বলাগড়ের নেতা কুন্তলের যোগসাজশের কথা জানিয়েছেন। অভিযুক্ত তাপসের দাবি ৩২৫ জন শিক্ষক পদপ্রার্থীর কাছ থেকে ৩ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা নিয়েছেন কুন্তল। এরপরই কুন্তলের চিনার পার্কের ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালায় ইডি। গ্রেপ্তার করা হয় কুন্তলকে।
কুন্তলের বিরুদ্ধে ভুয়ো ওয়েবসাইট চালানোর অভিযোগ রয়েছে। বেশ কিছু ওয়েবসাইট তৈরি করেছিলেন কুন্তল সেই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে চাকরিপ্রার্থীদের দেখানো হতো যে তাঁরা পরীক্ষায় পাশ করেছেন। আর ওই ওয়েবসাইট দেখিয়েই টাকা তুলতেন কুন্তল, তদন্তকারী সংস্থার কাছে তথ্য উঠে এসেছে। কুন্তল ঘোষের বাড়িতে যেদিন ইডি তল্লাশি করেছিল, সেখান থেকে ২০১৪ এবং ২০১৭ সালের মার্কশিট উদ্ধার হয় বলে সূত্রের খবর। জানা গিয়েছে, ২০১৪ সালের যে মার্কশিট পাওয়া গিয়েছে, সেটি জাল। ইডি আধিকারিকদের সন্দেহ, শুধু ২০১৪ সালই নয়, ২০১৭ সালের টেট ‘কেলেঙ্কারি’তেও কুন্তলের ভূমিকা রয়েছে।
অন্য দিকে, যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ গ্রেপ্তারের গোপাল দলপতির নাম জানিয়েছিলেন। এদিকে এই গোপাল দলপতিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কুন্তলের বিরুদ্ধে একাধিক তথ্য পায় ইডি। পার্থ চট্টোপাধ্যায় ছাড়া মানিক ভট্টাচার্যের কাছেও নিয়োগ দুর্নীতির টাকা পৌঁছত বলেই ইডি তদন্তে জানতে পেরেছে বলে সূত্রের দাবি। গোপাল দলপতির বক্তব্যকে সামনে রেখে কুন্তলকে ইডি জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় বলে সূত্রের খবর। সেটা রেকর্ডও করা হবে। পাশাপাশি নিয়োগ সংক্রান্ত বেনিয়মের টাকা পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং মানিক ভট্টাচার্যের কাছে গেলে তা কীভাবে যেত তাও কুন্তলকে জেরা করেই এদিন ইডি জানতে চাইতে পারে বলেই সূত্রের দাবি।