কুন্তলের ফ্ল্যাটে হানা ইডি-র, অভিযান তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের বাড়িতেও

হুগলির তৃণমূল যুবনেতা কুন্তল ঘোষের  ফ্ল্যাটে হানা দিলেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আধিকারিকেরা। শুক্রবার সকালে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা দু’টি দলে ভাগ হয়ে কুন্তলের দু’টি ফ্ল্যাটে তল্লাশি করতে হানা দেন। নিউটাউনের চিনার পার্ক এলাকায় বিলাসবহুল দু’টি আবাসনে সকাল থেকেই শুরু হয় এই তল্লাশি অভিযান। কারণ, এই কুন্তলের বিরুদ্ধেই টাকা নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন মানিক ভট্টাচার্য ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডল। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় একাধিকবার ইডি-র জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি পড়তে হয়েছে পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডলকে। তখনই জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে হুগলির তৃণমূল যুবনেতা কুন্তল ঘোষের নাম। বেআইনিভাবে শিক্ষক নিয়োগের ১৯ কোটি টাকা পেয়েছেন বলেও জানান তাপস মণ্ডল। সঙ্গে তাপসবাবুর এও জানান, ৩২৫ জন শিক্ষক পদপ্রার্থীর কাছ থেকে প্রায় সাড়ে ১৯ কোটি টাকা নিয়েছেন কুন্তল। যার মধ্যে রয়েছেন ২৬০০ চাকরিপ্রার্থীও। যাদের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে নিয়েছেন কুন্তল। এই সংক্রান্ত নথিও তাঁর কাছে রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তাপস। খুব স্পষ্টভাবে তাপস মণ্ডল এও জানিয়েছেন, ‘কুন্তল শুধু প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীদের থেকে টাকা তোলেননি, উচ্চপ্রাথমিক, এমনকী সংগঠক শিক্ষক পদে চাকরি দিতেও টাকা তুলেছেন। টাকা নেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে বার বার কুন্তলকে ফেরত দেওয়ার জন্যেও বলেছিলাম কিন্তু তা ফেরত দেননি।’

এই ঘটনা জানার পরই গত বুধবার বিকেলে প্রথমে সিবিআইয়ের তরফ থেকে নিজাম প্যালেসে ডেকে পাঠানো হয় কুন্তলকে। সিবিআইয়ের এই নোটিশে হাজিরাও দেন তৃণমূলের এই যুবনেতা। নিয়ে গিয়েছিলেন বেশ কিছু নথিও। এরপর এক ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাঁকে। এরপরই নিজাম প্যালেস থেকে বেরিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়ে কুন্তল এও জানান, ‘আমি যদি টাকা নিতাম, সিবিআই কি এত সহজে আমাকে ছেড়ে দিত?’ এরপর তাঁকে বৃহস্পতিবারও হাজিরা দিতে হয় নিজাম প্যালেসে।

এদিকে সূত্রে খবর, কেবলমাত্র নিউটাউনেই নয় এই মামলায় হুগলির বলাগড়ের বারুইপাড়ায় তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে হানা দেয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টর সূত্রে খবর, চারটে গাড়িতে ভাগ হয়ে মোট ১২ জন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আধিকারিক তাঁর বাড়িতে পৌঁছয়। শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় হুগলির জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ এবং হুগলি জেলার প্রাক্তন যুব সভাপতি ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

sixteen − 12 =