শুধু স্কুলেই নয়, রেলেও চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তুলেছিলেন কুন্তল, এমনই অভিযোগ এবার উঠল কুন্তলের বিরুদ্ধে। নিজেকে ইস্টার্ন জোনের এগজিকিউটিভ বলেও পরিচয় দিয়েছিলেন কুন্তল, ছাপানো হয়েছিল কার্ডও। বিশেষ সূত্রে খবর, রেলে চাকরি দেওয়ার নামে মাথা পিছু ১২ লক্ষ টাকা নিতেন কুন্তল। এদিকে আবার এ খবরও মিলছে, কুন্তল ঘোষের নিজেরই প্রোডাকশন হাউজ় রয়েছে। এদিকে আবার টলিপাড়ার বহু অভিনেতা, অভিনেত্রী, পরিচালকের সঙ্গেও ছিল কুন্তলের ওঠাবসা। একইসঙ্গে এ অভিযোগও উঠছে যে রেলে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে শিয়ালদা স্টেশনে ফাইনাল ভেরিফিকেশন, হাসপাতালে মেডিক্যাল, প্রার্থীর কাছে পৌঁছে যায় ফেক ইমেলও। আর এমনটা জানা গেছে রেলে চাকরি পাওয়ার নামে কুন্তলের সঙ্গে যোগাযোগ করা একজনের কাছ থেকেই। তিনি এই প্রসঙ্গে জানান, তিনি জানতেন যে কুন্তল কয়েকজনকে গ্রুপ ডি, স্কুলের চাকরি করে দিয়েছে। এরপর কুন্তলের সঙ্গে দেখা করার পর চাকরি নিয়ে কথা উঠতেই রেলের চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেয় কুন্তল। পাশাপাশি জানায় এর জন্য ১২ লক্ষ টাকা লাগবে। প্রথমদিকে বিশ্বাস না হলেও এরপর মেল আসে। আর তা দেখে ভরসা পান ওই চাকরিপ্রার্থী। এরপরই সিদ্ধান্ত নেন প্রথমে পাঁচ লক্ষ টাকা দেওয়ার দিই। কথা হয় চাকরি হলে বাকি টাকাটা দেওয়ার। এদিকে ফাইনাল ভেরিফিকেশনের জন্য ডাকার কথা ছিল শিয়ালদা স্টেশনে। তবে তিনি যাননি। তার আগেই কোথাও একটা খটকা লাগায় ওই চাকরিপ্রার্থী কুন্তলকে জানান, তাঁর চাকরির দরকার নেই। টাকা ফেরতের কথাও বলেন। পাশাপাশি ওই চাকিরপ্রার্থী এও জানান, রেলওয়ে.গভ.ইন’ থেকে ই-মেল পাঠিয়ে আসলে কুন্তল নিজের ক্ষমতা জাহির করতে চেয়েছিলেন।
এদিকে তদন্তে নেমে এটা সামনে আসছে যে, ধাপে ধাপে প্রতারণার সিঁড়িতে উঠে তুলে নিতেন লক্ষ লক্ষ টাকা। প্রথমে চাকরি প্রার্থীর কাছ থেকে নথি নেওয়া হত। তারপর চাকরি সংক্রান্ত ফেক ই-মেল আসল রেলওয়ে লেখা সাইট থেকে পাঠানো হত। ই-মেল এলেই দাবি করা হত ৫ লক্ষ টাকা। মেডিক্যালের জন্য ডাকা হত শিয়ালদা লাগোয়া একটি হাসপাতালে। সেখানে হত ব্লাড টেস্ট। এরপর শিয়ালদহের গেস্ট হাউসে ডাকা হতো ফাইনাল ভেরিফিকেশনের জন্য।
ফলে সব মিলিয়ে একটা বড় জল্পনা এবার শুরু হয়েছে কুন্তলের এই কীর্তি দেখে। তা হল শুধু স্কুলে নয়, রেলেও, কেবল রাজ্য সরকারি চাকরি নয়, কেন্দ্রীয় সরকারি চাকরিতেও কী তাহলে কোনও যোগাযোগ ছিল কুন্তলের। নাকি পুরোটাই ভাঁওতা দিয়েছেন কুন্তল! এদিকে সূত্রে খবর, রেলের নিয়োগ তো কেবল আরআরই ও আরআরসি-র মাধ্যমেই হয়। অন্য কোনওভাবে হয় না।