অভিষেককে ব্যক্তিগত ভাবে চেনেন না, দাবি কুন্তলের

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ব্যক্তিগতভাবে চেনেন না বলেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের কাছে দাবি করেছেন নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ধৃত কুন্তল ঘোষ, এমনটাই খবর সিবিআই সূত্রে। আদালত থেকে নির্দেশ পাওয়ার পর জেলে গিয়ে কুন্তল ঘোষকে জেরা করেন সিবিআই আধিকারিকেরা। সূত্রের খবর, সেই জেরাতেই কুন্তল জানান, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত কোনও সম্পর্ক নেই। সবাই যেভাবে চেনেন, তিনিও সেভাবেই চিনতেন। অর্থাৎ কুন্তলের যে বক্তব্যের পর এত কিছু ঘটনা ঘটে গেল, এবার সেই কুন্তলই একেবারে ১৮০ ডিগ্রি অবস্থান পরিবর্তন করলেন। জেলে গিয়ে তদন্তকারীরা তাঁকে জেরা করার পরই সামনে এল নয়া তথ্য। এবার তাঁর দাবি, অভিষেকের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক নেই। দলগতভাবে তিনি অভিষেককে চেনেন। আলাদা করে চেনেন না। এমনকী অভিষেকের সঙ্গে কুন্তলের যে ছবিটি ভাইরাল হয়, তার প্রেক্ষিতেও কুন্তল দাবি করেন, এক রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে গিয়ে এই ছবি তিনি তুলেছেন। একইসঙ্গে ২৯ মার্চ তৃণমূল যুবর যে সভা শহিদ মিনারে হয়, সেখানে যে বক্তব্য অভিষেক রাখেন, তা কুন্তল কীভাবে জানলেন তা জানতে চায় সিবিআই। সূত্রের দাবি, কুন্তল তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, পরের দিন খবরের কাগজ পড়ে তা তিনি জানতে পেরেছেন। পাশাপাশি এও দাবি করেন, যে চিঠি তিনি লিখেছেন তার জন্য কোনও চাপ দেওয়া হয়নি। নিজে থেকে লিখেছেন তিনি। এরপরই সামনে আসে অভিষেকের সঙ্গে তাঁর ছবি প্রসঙ্গেও। এই প্রসঙ্গে কুন্তল জানান, রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে দেখা হয়েছিল। সেখানেই ছবি তোলেন তিনি। এর আগে একই সুর শোনা গিয়েছে অভিষেকের বক্তব্যেও। গত শনিবার নিজাম প্যালেসে সিবিআই জেরার সময়ও অভিষেক জানান, ‘আমি কোনওদিন দেখিইনি, চিনিই না। আমার ফোনে কথাও হয়নি।’ একইসঙ্গে অভিষেক এও বলেছিলেন, ‘২৯ মার্চ শহিদ মিনার ময়দানে যে বক্তব্য রেখেছিলাম, কোথাও কুন্তল ঘোষের নাম নিইনি। অনেকেই তো গ্রেপ্তার হয়েছেন।’ আর এখানেই অভিষেকের প্রশ্ন, ‘আমি কি একবারও বলেছি কুন্তলকে চাপ দেওয়া হয়েছে? আমি বলেছি, মদন মিত্র ও কুণাল ঘোষের সঙ্গে এই কাজ করা হয়েছে। তাঁরা জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর, হেপাজতে থাকাকালীন তাঁদের অভিজ্ঞতা আমাকে জানিয়েছেন। সেই ভিত্তিতে আমি বলেছি।’
তবে সিবিআই আধিকারিকদের জেরায় কুন্তলের এই বয়ান সামনে আসতেই জোর চর্চা শুরু হয়েছে বঙ্গ রাজনীতিতে। কারণ, কুন্তলের এজেন্সির বিরুদ্ধে চাপ দিয়ে নাম বলানোর চেষ্টার অভিযোগকে সামনে রেখেই প্রথমবার নিয়োগ মামলায় অভিষেকের প্রসঙ্গ উত্থাপিত হয়। আদালত ও হেস্টিংস থানায় কুন্তলের অভিযোগপত্রকে সামনে রেখেই কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন। এরপর সুপ্রিম নির্দেশে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে মামলা বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে স্থানান্তরিত হলেও হুকুম বদলায়নি। সিবিআই সেইমতো অভিষেককে তলবও করে। ৯ ঘণ্টা ৪০ মিনিট নিজাম প্যালেসে সিবিআইয়ের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ তথা তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ডকে। তখনই তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ডও জানান তিনি চেনেন-ই না কুন্তলকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × one =