ফের নিয়োগ দুর্নীতি-তদন্তে আদালতের ভূমিকা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের। শনিবার তিনি বলেন, ‘বিজেপি নেতাদের নাম আসলে তখন চোখে সানগ্লাস পরে বসে থাকেন নাকি?’ আর এই প্রশ্ন যে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতিদের উদ্দেশেই তা বুঝতে কারও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।
এদিকে শুক্রবার নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় চন্দন মণ্ডল-সহ মোট ৬ জন ‘এজেন্ট’কে গ্রেপ্তার করেছে সিবিআই। এদিকে কেন্দ্রীয় তদন্তাকীরী সংস্থা সূত্রে এ খবরও মিলছে যে, এই এজেন্টদের জেরা করে প্রসন্ন রায়ের যোগের তথ্য উঠে এসেছে। প্রসন্নর অ্যাকাউন্টে চাকরি প্রার্থীদের টাকা ঢোকার তথ্যও পেয়েছে সিবিআই। নগদ টাকাও গিয়েছে মিডলম্যান প্রসন্নর কাছে। প্রসন্নর পরিবারের সদস্যের অ্যাকাউন্টেও টাকা যেত বলেও সন্দেহ সিবিআইয়ের। এই নিয়ে নতুন করে শুরু হয়েছে জল ঘোলা। এ প্রসঙ্গে শনিবার কুণাল ঘোষকে প্রশ্ন করা হলে তিনি পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে জানতে চান, ‘সিবিআই তদন্তে যদি প্রসন্ন রায়ের নাম আবার আসে এবং চন্দন মণ্ডল তাঁর এজেন্ট ছিলেন আসে, তা হলে প্রসন্ন রায়ের বাড়িতে দিলীপ ঘোষের সম্পত্তির দলির পাওয়া গিয়েছিল, দিলীপ ঘোষকে গ্রেফতার করে কেন কাস্টডি ইন্টারোগেশন হবে না? আজ আদালত বলতে পারছে না?’
এরই পাশাপাশি বিচারপতির নাম উল্লেখ করে কুণাল ঘোষ প্রশ্ন রাখেন, ‘যে বিচারপতিরা আছেন, তাঁদের কাছে কেস ডায়েরি যাচ্ছে না? আপনারা কেন আজ বলছেন না একে ধরে আনব, ওকে ধরে আনব। দিলীপ ঘোষকে অ্যারেস্ট করুন কেন বলবেন না? কেন কোনও বিচারপতি বলবেন না? যদি প্রসন্ন রায় নিয়োগ দুর্নীতির কিংপিন হয়, তাঁর বাড়িতে যাঁর সম্পত্তির দলিল পাওয়া যাচ্ছে তিনি বাইরে ঘুরে জ্ঞান দিয়ে যাচ্ছেন।’
প্রসঙ্গত, প্রসন্ন রায়ের বাড়ি দিলীপ ঘোষের বাড়ির দলিল প্রসঙ্গে আগেও কুণাল বিজেপি নেতার গ্রেফতারির দাবি করেন। যদিও দিলীপ ঘোষের বক্তব্য ছিল, ‘আমার দলিল, আমি দিয়েছি। কারও বাপের টাকায় আমি ফ্ল্যাট কিনিনি। যেখানে কিনেছি, সেখানকার সোসাইটির ওই প্রধান। ওকেই তখন জানতাম আমি। বলেছিলাম, তুমিই আমার মিটারের নাম পাল্টে দাও। তাই যে অরিজিনাল কপি আমার ব্যাঙ্কে রয়েছে, তারই একটি কপি ইলেকট্রিক মিটার চেঞ্জ করার জন্য দিয়েছিলাম ওকে।’ উল্লেখ্য, এর আগেও বিভিন্ন বিষয়ে বিচারপতিদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিতর্কে জড়ান কুণাল। এদিনের মন্তব্যে তাতে ঘৃতাহুতি হল বললে কম হবে না বলেই ধারনা বঙ্গ রাজনীতিবিদদের।