কলকাতা: আসানসোলে শুভেন্দু অধিকারীর কম্বল বিতরণী সভায় হুড়োহুড়িতে এক শিশু-সহ ৩ জনের মৃত্যুর দায় কার, তা নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। এ নিয়ে চলছে রাজনৈতিক দোষারোপ, পাল্টা দোষারোপ। এবার আসানসোলের দুর্ঘটনার জন্য কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার দিকে আঘুল তুললেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। শুভেন্দু অধিকারীর গ্রেপ্তারির দাবিতে এককাট্টা রাজ্যের শাসকদল।
কুণাল বলেন, ‘পুলিশ ওইটুকু জায়গায় অনুমতি দেয়নি। বড় জায়গায় করতে বলেছিল। কেউ যোগাযোগ করেনি। মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে। তৃণমূলের নেতারা মানুষকে উদ্ধার করতে গিয়েছিলেন।’ সাংবাদিক বৈঠকের মাঝে এরপর শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্যের একটি ভিডিও দেখিয়ে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থাকে আক্রমণ করেন তৃণমূল নেতা। তিনি বলেন, ‘শুভেন্দু পুলিশকে হুমকি দিচ্ছে। আর আপনি বিচারপতি মান্থা নিরাপত্তা দিচ্ছেন। কালকের ঘটনার দায়িত্ব আপনাকেও নিতে হবে। ওর অবচেতনে বিচারপতি মান্থার রক্ষাকবচ কাজ করছে। আচমকা যদি কোনও ঘটনা ঘটে, তার জন্য আদালতের অপেক্ষায় থাকতে হবে? সুপ্রিম কোর্টে সিরিজ অফ অর্ডার আছে, আদালত কোনও তদন্তের উপর হস্তক্ষেপ করবে না। শুধু মনিটর করতে পারে। মান্থার সুরক্ষাবলয় পক্ষপাতদুষ্ট। ন্যায় বিচারের পরিপন্থী।’
উল্লেখ্য, কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা সম্প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন, শুভেন্দুর বিরুদ্ধে নতুন করে কোনও এফআইআর করা যাবে না। এফআইআর করতে গেলে আদালতের অনুমতি নিতে হবে। একই সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে থাকা সব এফআইআর তুলে নেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। আগেই শুভেন্দুকে রক্ষাকবচও দেওয়া হয়। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেই সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য।
বৃহস্পতিবার শুভেন্দুর গ্রেপ্তারিরও দাবি জানান তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক। তাঁর কথায়, ‘শুভেন্দু আর তার সাঙ্গপাঙ্গরা মানুষকে বিপদে ফেলে পালিয়ে গিয়েছে। কম্বল দেখিয়ে লোক এনেছিল। উদ্ধার কাজে গেল না কেন? একটাও অ্যাম্বুল্যান্স ছিল না কেন? দায়িত্বজ্ঞানহীন। এদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে মামলা করা উচিত।’
কার গাফিলতিতে এই দুর্ঘটনা ঘটল তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট। ডিসি পদমর্যাদার আধিকারিকের নেতৃত্বে চলবে তদন্ত। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব জেলা পুলিশ সুপার এবং জেলাশাসকের কাছে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেবে ওই তদন্ত কমিটির সদস্যরা।