সিবিআই আধিকারিক সেজে ডাকাতি কলকাতা পুলিশেরই এক কর্মীর। আর এই সিবিআই আধিকারিকের রূপ ধরেই ভবানীপুর থেকে ৫০ লাখ টাকার ডাকাতির ছকও কষেছিলেন তিনি-ই। তবে শেষ পর্যন্ত ভবানীপুরের দুঃসাহসিক এই কাণ্ডের কিনারা করল কলকাতা পুলিশের আধিকারিকরাই। লালবাজার সূত্রে খবর, ধৃত এই পুলিশ কর্মী লালবাজারের জালে স্পেশাল ব্রাঞ্চে কর্মরত। নাম দেবব্রত কর্মকার। সূত্রে খবর, ভবানীপুরের ডাকাতির ঘটনায় মাস্টারমাইন্ড ছিল সে। আর সিবিআই আধিকারিক সেজে ডাকাতির জন্য পুলিশি আদবকায়দা সেই শিখিয়েছিল তার সাকরেদদের।
লালবাজার সূত্রে এই বিষয়ে জানানো হয়, গত ১২ ডিসেম্বর রাতে ভবানীপুরে যে দুঃসাহসিক ডাকাতি হয়, তার পরিকল্পনা করেছিল দেবব্রত। কয়েক সপ্তাহ ধরে ডাকাতদের ট্রেনিং দিয়েছিল সে। পুলিশি আদব কায়দা শিখিয়েছিল। আর তখনই শেখানো হয়, কি ভাবে সিবিআই আধিকারিকের রূপ ধরে ডাকাতি করতে হবে। গত অক্টোবর মাস থেকেই দেবব্রতর পরামর্শেই রাকেশ ও ডাকাতদল পুলিশি আদব কায়দা শিখতে শুরু করে। পুলিশ সাজার জন্য প্রয়োজন পোশাকও সাপ্লাই করে দেবব্রত। এদিকে দেবব্রতর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল ভবানীপুরের ওই ব্যবসায়ীর এক প্রতিবেশীর। তাঁর কাছ থেকেই ভবানীপুরের ফ্ল্যাটে প্রচুর টাকা ও গয়না রাখার খবর পায় দেবব্রত।
জানা গিয়েছে, প্রায় দেড় মাস ধরে দেবব্রতর উপর নজরদারি রেখেছিল কলকাতা পুলিশ। লালবাজারের গোয়েন্দারা কলকাতার বিভিন্ন অঞ্চলের সিসিটিভি ফুটেজে খতিয়ে দেখে এই ডাকাতদলের হদিশ পায়। এরপরই গোয়েন্দা আধিকারিকদের স্ক্যানারে চলে আস দেবব্রত কর্মকার। তদন্তে উঠে আসে, ভবানীপুরের এক ব্যবসায়ীর ফ্ল্যাটে সিবিআই আধিকারিক সেজে ঢুকে ৫০ লাখ টাকার নগদ ও গয়না ডাকাতি করে অভিযুক্তরা। প্রথমে ডাকাতির অন্যতম পাণ্ডা রাকেশ মণ্ডল সহ মোট ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। উদ্ধার হয় পুলিশ স্টিকার দেওয়া গাড়িও। ধৃত রাকেশকে জেরা করে উঠে আসে দেবব্রত কর্মকারের নাম।
এর পাশাপাশি তদন্তে উঠে আসে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের এক মহিলা কনস্টেবলের নামও। জানা যায়, তার অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছিল ভবানীপুরের এই ডাকাতির টাকা। আদালতে গোপন জবানবন্দিও দেন ওই মহিলা পুলিশকর্মী।