জঙ্গি দমনে নয়া সাফল্য কলকাতা পুলিশের। আইএস মডিউলের মাথা আব্দুল রাকিব কুরেশিকে মধ্যপ্রদেশ থেকে গ্রেপ্তার করল কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স। সূত্রের খবর, কিছুদিন আগে হাওড়া থেকে ধৃত জঙ্গি সাদ্দামকে আইএস-এর সঙ্গে যুক্ত করে এই কুরেশিই। আপাতত কুরেশিকে ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতায় নিয়ে আসা হচ্ছে।এসটিএফ সূত্রে খবর, মধ্যপ্রদেশের খান্ডোয়া থেকে সোমবার মধ্য রাতে আব্দুল রাকিব কুরেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই আব্দুল রাকিব কুরেশি প্রাক্তন সিমি নেতা বলেও পরিচিত। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, সাদ্দাম ও সইদকে অত্যাধুনিক স্বয়ংক্রিয় রাইফেল সরবরাহ করার কথা ছিল কুরেশির। তাদের জেরা করেই মেলে এই কুরেশির খবর। তাকে সোমবার রাতে মধ্যপ্রদেশ থেকে গ্রেপ্তারের পর মঙ্গলবার ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতায় নিয়ে আসার জন্য আইনি প্রক্রিয়া চালানো হয় কলকাতা পুলশের তরফ থেকে। এরই পাশাপাশি এসটিএফের তরফ থেকে এও জানানো হয়, ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০ বি, ১২১, ১২১ এ-সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। সাদ্দাম ও সইদ তার মাধ্যমেই ইসলামিক স্টেটে যোগ দেয় বলে খবর। সঙ্গে এ তথ্যও সামনে এসেছে যে, জেহাদ নিয়ে সাদ্দাম ও কুরেশি একই ভাবধারায় বিশ্বাসী। সেই কারণেই উভয়ের যোগাযোগ আরও ঘনিষ্ঠ হয়। এরপরই কুরেশি অস্ত্র সরবরাহ ও তৈরির কথা বলে সাদ্দামদের।
প্রসঙ্গত, কুরেশি ভোপালের প্রাক্তন সিমি নেতা। ওই এলাকা জুড়েই পরবর্তী সময়ে সিমি-র সক্রিয়তা বজায় রেখেছিল এই কুরেশিই। কুরেশি সিরিয়া বা ইরাকের আইএস শিবির থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছে কি না, তাও জানতে মরিয়া তদন্তকারীরা। আর সেই কারণেই কুরেশিকে নিজেদের হেপাজতে নিতে চাইছে এসটিএফ। একইসঙ্গে এসটিএফ সূত্রে খবর, এম টেকের ছাত্র সাদ্দামের সঙ্গে কুরেশির আলাপ হওয়ার পর বাংলায় হামলার ছক কষতে মদত জুগিয়েছিল বছর তেত্রিশের কুরেশি। কারণ, সাদ্দামের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া একটি ডায়েরিতে আরবি ভাষায় ‘বায়াত’ বা আইএস-এ যোগ দেওয়ার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়ার কথা লেখা রয়েছে। সে যে লিখিতভাবে আইএস-এ যোগ দিয়েছে, এটি তারই প্রমাণ। এর পাশাপাশি সাদ্দাম জেরায় স্বীকারও করেছে, আইএসে যোগ দেওয়া প্রত্যেককেই ওই ধরনের শপথ লিখতে হতো। এছাড়াও সাদ্দাম যে আঞ্চলিক প্রধান অথবা ‘আমির’ তারও প্রমাণ মিলেছে ওই ডায়েরিতে, বলে দাবি এসটিএফের। একইসঙ্গে এসটিএফের দাবি, সাদ্দাম ও সৈয়দ ঘরোয়া পদ্ধতিতে ড্রোন ও অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি প্রশিক্ষণ নিয়েছিল। আর এই সব ঘটনার জেরেই তাঁদের সঙ্গে কুরেশির যোগ আরও নিবিড় হয়।
শুধু তাই নয়, মধ্যপ্রদেশ থেকে ধৃত আব্দুল রাকিব কুরেশি আগেও বিভিন্ন রকম জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত ছিল।তার কাছে পাওয়া পেনড্রাইভ ও বিভিন্ন ডিজিটাল এভিডেন্স থেকে এটা স্পষ্ট। তবে কোথাও কোনও নাশকতা ছড়ানোর পরিকল্পনা ছিল কি না তা খতিয়ে দেখছে তদন্তকারীরা। তবে জানা গিয়েছে তারা অর্থ সংগ্রহ করছিল, অস্ত্র কেনার কাজ চালাচ্ছিল ও সংগঠন বাড়ানোর কাজ করছিল। এই সংগঠনের লিঙ্ক-ম্যান কে কে রয়েছে তা খোঁজারও চেষ্টা চালাচ্ছে এসটিএফ। যদিও এই মডিউলের শিকড় কতটা ছড়িয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়।