কলকাতা: দশমীতে বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে নিহত অয়ন মণ্ডলের মৃত্যু কীভাবে, সেই জটই খোলার চেষ্টা করছে পুলিশ। কখনও সামনে আসছে ত্রিকোণ প্রেমের তত্ত্ব, কখনও আবার এমনটাও শোনা যাচ্ছে দশমীতে মত্ত অয়নের অভব্য আচরণে মাথা ঠিক রাখতে না পেরে তাঁর প্রেমিকার ভাই মারধর করেন। যার জেরে অয়নের মৃত্যু হয়।
এদিকে সামনে এসেছে আরও একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য। একাদশীতে, বৃহস্পতিবার হরিদেবপুরে নিহত যুবক অয়ন মণ্ডলের মাকে ফোন করেন তাঁর বান্ধবী। ‘ভিকি (অয়নের ডাকনাম) কোথায়? ওকে ফোনে পাচ্ছি না’— অয়নের মাকে অস্থির জিজ্ঞাসা করছিলেন বান্ধবী। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই অয়নের বাড়িতে গিয়ে রীতিমতো কান্নাকাটি জুড়েছিলেন অয়নের প্রেমিকা, এমন দাবিই করেছেন অয়নের মা মঞ্জু মণ্ডল।
এদিকে প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসছে দশমীর রাতে অয়নকে মারধর করে তাঁর দেহ মগরাহাটে ফেলে দেওয়া হয়। গোটা ঘটনা জানার পরও একাদশীতে অয়নের বাড়িতে গিয়ে যে আচরণ করেছেন অয়নের বান্ধবী, তাতে সকলেই অবাক।নিহত অয়নের মা মঞ্জুদেবীর দাবি, তাঁদের বাড়িতে আসার পর থেকেই অস্থির দেখাচ্ছিল ছেলের বান্ধবীকে। বসে ক্রমাগত পা নাচাচ্ছিল সে।
দশমীর রাতে তাদের বাড়িতে যে গিয়েছিলেন অয়ন এবং সেখানে তাঁকে তাঁর মা যে মারধর করেছেন, সে কথা অয়নের মাকে বলেন বান্ধবী। এ কথা জানার পরই অয়নের মা বান্ধবীর কাছ থেকে জানতে চান যে, তাঁদের মধ্যে কি কোনও ঝামেলা হয়েছে? মঞ্জুদেবীর কথায়, ‘ও বলে যে, আমি যদি কিছু করতাম, তা হলে কি এখানে আসতাম!’
হরিদেবপুরের অয়ন মণ্ডলের খুনের ঘটনায় তাঁর বান্ধবী ও তার পরিবারের ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, দশমীর রাতে অয়নের বান্ধবীর মায়ের কথায় ভাই তাঁকে পিটিয়ে খুন করে। তারপর পরিবারের সকলে মিলে দেহ লোপাটের পরিকল্পনা করে। পুলিশের চোখে ধুলো দিতে পাকা অপরাধীদের মতো মোবাইল এক জায়গায় সুইচ অফ করে ফেলা হয়। দেহ ফেলা হয় সম্পূর্ণ অন্য জায়গায়। পুলিশেরই একটি সূত্রের খবর, এই ঘটনায় ত্রিকোণ প্রেমের তত্ত্ব উঠে আসছে। সেখানেও মারাত্মক অভিযোগ মা ও মেয়ে দুজনের সঙ্গেই সম্পর্ক ছিল অয়নের। ঠিক কী কারণে ওই রাতে অয়নকে মারধর করে মেরে ফেলা হল, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।