ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো পরিষেবার কাজের জন্য তিনবার বিপর্যয় হয়েছে। যে কারণে একাধিকবারই ভেঙে পড়েছে অথবা ফাটল ধরেছে। এই ফাটল ধরা বাড়িগুলির মূল্যায়ন করা হয়েছে কেএমআরসিএল-এর তরফ থেকে। এরপরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ২৩ টি বাড়ি প্রথমভাগে তৈরি করা হবে। সেই বাড়িগুলি তৈরি করার জন্য ইতিমধ্যে টেন্ডার ডাকা হয়েছে বলে জানান কেএমআরসিএল-এর অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার (সিভিল) অভিজিৎ চক্রবর্তী । একইসঙ্গে তিনি এও জানান, এরপর ধাপে ধাপে যে বাড়িগুলির অবস্থা খুব খারাপ এবং ভেঙে ফেলতে হবে, সেগুলির জায়গায় নতুন করে বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হবে। তবে আপাতত ২৩ টি বাড়ি তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফাটল ধরে যাওয়া বাড়িগুলির মেরামত করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে আবার বউবাজারে কাজ কবে শেষ হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকলেও গঙ্গার নিচ দিয়ে মেট্রোর ট্রায়াল রানের দিনক্ষণের কথা জানিয়ে দিল কেএমআরসিএল। সোমবার কেএমআরসিএল-এর তরফ থেকে জানানো হয়, দু’টি রেক এবং অস্থায়ী ট্র্যাকে আগামী এপ্রিলে হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো ট্রায়াল রান হতে চলেছে। চলতি বছরেই হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত গঙ্গার নিচ দিয়ে মেট্রো পরিষেবা শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেএমআরসিএল। যদিও শিয়ালদহ-এসপ্ল্যানেড মেট্রোর লাইন কবে জুড়বে, সেটা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে এখনও। কারণ, বউবাজার এলাকায় ভূগর্ভস্থ কাজ এখনও অনেকটা বাকি রয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় পরিস্থিতি জটিল হয়ে রয়েছে। কংক্রিটের স্ল্যাব বসে যাওয়ার ফলে সমস্যার অনেকটাই সমাধান হয়েছে কিন্তু কাজ এখনও বেশ কিছুটা বাকি রয়েছে। জানা যাচ্ছে, কেএমআরসিএল-এর তরফে চেষ্টা করা হচ্ছে, আগামী বছরের মধ্যে তা শেষ করে ফেলার। যেখানে স্ল্যাব বসে যাওয়ায় সেখান থেকে সাপোর্ট পিলারগুলি সরিয়ে ফেলা হবে। সেখানে এবার লাইন পাতার কাজ শুরু হবে।
এদিকে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বউবাজারের গৌড় দে লেন, দুর্গা পিতুরি লেন ও স্যাকরা পাড়া লেনের তিনটি বাড়ি থেকে ৪৫ জনকে সরিয়ে হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। স্ল্যাব বসানোর কাজ শেষ হয়ে যাওয়ায় ৩ মার্চ তাঁদের আবার ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয়। গোটা ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের জন্য আপাতত ব্যয় ৮ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। প্রকল্পের জন্য এখনও পর্যন্ত বরাদ্দ হয়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা।
এদিকে বউবাজার থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত মোট ৮টি ক্রস প্যাসেজ হওয়ার কথা ছিল। যাতে ভূ-গর্ভে কোনও জরুরিকালীন সময়ে যাতে যাত্রীরা সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন, সেই কারণেই এই ব্যবস্থা। তৃতীয়বারের বিপর্যয় তদন্ত করতে গিয়ে দেখা যায় এই ক্রস প্যাসেজ তৈরি করাই মূলত জটিল হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সেই কারণে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, ৮ টি ক্রস প্যাসেজের মধ্যে ৫ টি থাকবে। বাকি তিনটি অর্থাৎ শিয়ালদহের দিক থেকে ৩টি বাতিল করে দেওয়া হল। ইতিমধ্যে ৩টি ক্রস প্যাসেজ তৈরি হয়ে গিয়েছে। একটির কাজ চলছে। একই কাজ শুরু হবে।