আত্মসমর্পণ করলেন কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশন বা কেএলও প্রধান জীবন সিংহ। তাঁর এই আত্মসমর্পণের পর স্বাভাবিক ভাবেই শুরু হয়েছে জল্পনা। তাহলে এবার অস্ত্র ছেড়ে জীবনের মূল স্রোতে ফিরতে চাইছেন তিনি কেএলও প্রধান জীবন সিংহ কি না তা নিয়েই। সূত্র খবর, শুক্রবার অসম রাইফেলসের কাছে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। সঙ্গে এ খবরও মিলছে, ভারত-মায়ানমার সীমান্ত দিয়ে ওই দিনই নাগাল্যান্ডের লোঙ্গা এলাকায় ঢোকেন জীবন সিংহ। সেখানেই অসম রাইফেলসের সামনে করেন আত্মসমর্পণ। এরপরই তাঁকে দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হয় বলেও সূত্রে খবর মিলছে। সঙ্গে এও জানা যাচ্ছে, রাজধানীতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে তাঁর কথা বলার সম্ভাবনাও রয়েছে। তবে এই প্রসঙ্গে শনিবার দুপুর পর্যন্ত কেন্দ্রীয় আধা সেনা বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে সরকারিভাবে কিছু জানানো হয়নি।
পাঁচ মাস আগেই কেএলও-র দুই শীর্ষ নেতা কৈলাশ কোচ এবং তাঁর স্ত্রী জুগলি রাজ্য পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করার পর থেকেই জীবন সিংহের আত্মসমর্পণের সম্ভাবনা বাড়ছিল বলে ধারনা করছিলেন রাজনীতিবিদের একাংশ। এদিকে আবার কয়েকদিন আগেই অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা ট্যুইটে দাবি করেন, জীবন সিং শান্তি আলোচনায় রাজি। এরপরই এই আত্মসমর্পণের ঘটনা।
উল্লেখ্য, ১৯৯৫-তে তৈরি হয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কেএলও। বাংলার কোচবিহার, মালদা, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর ও জলপাইগুড়ি নিয়ে পৃথক রাজ্যের দাবি করে এসেছে এই সংগঠন। বাংলার বাইরে উত্তর-পূর্বের একাধিক রাজ্যে নাশকতামূলক ঘটনায় নেপথ্যে এই কেএলও-র হাত রয়েছে বলে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলির তরফে দাবি করা হয়। সেই আবহে জীবন সিংহের এই আত্মসমর্পণকে কেন্দ্রের দিক থেকে নিঃসন্দেহে এক বড় সাফল্য বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এখানে একটা কথা বলতেই হয়, নরেন্দ্র মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই উত্তর পূর্বের বিচ্ছিন্নবাদী সংগঠনগুলিকে মূল স্রোতে ফেরাতে চেষ্টা শুরু করেছে কেন্দ্র। গত সপ্তাহেই মণিপুরে অস্ত্র সহ আত্মসমর্পণ করে বিচ্ছিন্নবাদী সংগঠনের ৪৩ জন সদস্য। রাজধানী ইম্ফলে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং-এর কাছে আত্মসমর্পণ করেন তাঁরা।