৯৫ কোটি টাকার প্রতারণার দায়ে কেকেএন গ্রুপের মালিককে গত বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এরপর তাকে স্পেশাল কোর্টে তোলা হলে ১০ দিনের অর্থাৎ, ১০ এপ্রিল পর্যন্ত ইডি-র হেপাজতে থাকার নির্দেশ দেয় আদালত।
এদিকে ইডি সূত্রে খবর, ভুয়ো সম্পত্তি দেখিয়ে কৌশিক কুমার নাথ একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে ৯৫ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। এরপর বিপুল পরিমাণ টাকা হাওলার মাধ্যমে বিদেশে পাঠিয়েও দেন। ইডি সূত্রে এও জানানো হয়েছে যে, ওই বিপুল পরিমাণ টাকা উদ্ধার করতে না পারলেও প্রতারণার টাকায় কেনা প্রায় ৪ কোটি টাকার সম্পত্তি ইতিমধ্যে বাজেয়াপ্ত করেছে। এই কৌশিক নাথের বিরুদ্ধে অন্য রাজ্যে চিটফান্ড সংস্থা খুলে টাকা হাতানোর অভিযোগও রয়েছে।
ইডি সূত্রে এও জানানো হয়েছে, অভিযুক্ত ২০০৭ সাল থেকে ব্যাঙ্কে সম্পত্তি বন্ধক রেখে ঋণ নেওয়া শুরু করে। টানা ৫ বছর সে একাধিক ব্যাঙ্ক থেকে সব মিলিয়ে ৯৫ কোটি টাকা ঋণ নেয়। নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও কিস্তির টাকা জমা না পড়ায় ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ তার জমা দেওয়া নথিপত্র পরীক্ষা করে। তখন জানা যায়, সম্পত্তিগুলির কোনও অস্তিত্বই নেই। তখনই ব্যাঙ্ক কর্কৃপক্ষ বুঝতে পারে যে সমস্ত ভুয়ো নথি জমা দিয়ে কৌশিক নাথ বিপুল অর্থের ঋণ নিয়েছে। শুধু এই রাজ্যেরই নয়, ভিন রাজ্যের সম্পত্তির জাল কাগজও জমা দিয়েছিল বলেও অভিযোগ।
এদিকে ইডি-র তরফ থেকে ইতিমধ্যে আর্থিক নয়ছয়ের তদন্তে নেমে ইডি-র তরফ থেকে খোঁজখবর নেওয়া শুরু হয়েছে যে ঋণ নেওয়া এই বিপুল টাকা কৌশিক নাথ কোথায় সরিয়েছে। আর এই তদন্তে নেমেই কলকাতা সহ বিভিন্ন জেলায় তার জমিজমা ও ফ্ল্যাটের হদিশ মেলে। তবে কয়েক কোটি টাকা কোথায় গেল, তার হদিশ এখনও নেই। এদিকে বিশেষ সূত্রে ইডি-র কাছে খবর, কিছু টাকা এক পরিচিতের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে পাঠিয়েছে কৌশিক। বিভিন্ন রাজ্যে পরিবহন, হোটেল সহ অন্য ব্যবসায় বিনিয়োগ করা হয়েছে কিছু টাকা। এসব কাণ্ডের নথি জোগাড়ের কাজ চলছে ইডি-র তরফ থেকে। একই সঙ্গে ইডি-র আধিকারিকেরা নজরে রেখেছেন কৌশিক কুমার নাথের সঙ্গে নিয়োগ দুর্নীতির কোনও যোগসূত্র রয়েছে কিনা সে ব্যাপারেও। কারণ, নিয়োগ দুর্নীতির টাকাও হাওয়ালার মাধ্যমে বিদেশে পাচার হয়েছে এমন তথ্য ইডি-র কাছে এসেছে বলে সূত্রে খবর।