মোদির তৃতীয় দফার সরকারের স্থায়িত্ব নিয়ে ফের প্রশ্ন খাড়গের

নয়াদিল্লি, ১৫ জুন: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তৃতীয় দফার সরকারের স্থায়িত্ব নিয়ে আরও একবার প্রশ্ন তুললেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে।
শুক্রবার বেঙ্গালুরুতে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা প্রসঙ্গে খাড়গে বলেন, ‘এনডিএ কোনও রকমে সরকার গড়েছে ভুল করে। সরকার গড়ার আদেশ নরেন্দ্র মোদি পাননি। তাঁর সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। যে কোনও সময়ে সরকার পড়ে যেতে পারে।’ মোদির সরকার পতনের এই সম্ভাবনার কথা কংগ্রেস সভাপতি প্রথম বলেছিলেন দিল্লিতে, ভোটের ফলাফল ঘোষণা পর ইন্ডিয়া জোটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে। তবে সেবার এহেন মন্তব্য বৈঠকে করলেও, শুক্রবারের মন্তব্য ছিল প্রকাশ্যে।
খাড়গে বলেন, ‘আমরা তো চাই সরকারটা চলুক। দেশের ভালো। দেশকে মজবুত করতে আমরাও একসঙ্গে দেশের জন্য কাজ করতে চাই। কিন্তু আমাদের প্রধানমন্ত্রী কোনও কিছু ঠিকঠাক চললেও, সেটা চলতে দেন না। তবে আমাদের পক্ষ থেকে বলতে পারি, দেশকে শক্তিশালী করার জন্য আমরা সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করব।’ খাড়গের এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানায় বিজেপি ও শরিকরা। তামিলনাড়ুর বিজেপি সভাপতি কে আন্নামালাই বলেন, ‘শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের গণতান্ত্রিক আগ্রহ দেখার পরও যদি তাঁর মনে হয় সরকারের পতন হবে, বেশি দিন টিকবে না। তা হলে বলব, উনি মূর্খের স্বর্গে বাস করছেন।’
এনডিএর শরিক দল বিহারের জেডিইউ নেতা নীরজ কুমার আবার খাড়গেকে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের কথা মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, ১৯৯১ সালের নির্বাচনের পর কংগ্রেসের হালও এমনই হয়েছিল। সে সময় নরসিংহ রাও সংখ্যালঘু সরকার গড়ে, তা চালিয়েও ছিলেন। তাঁর মন্তব্য, কংগ্রেস এখনও ৯৯-এর চক্করে পড়ে রয়েছে, বেরতে পারছে না।
বিহারের আরজেডি নেতা ইজাজ আহমেদ অবশ্য খাড়গেকে সমর্থন করে বলেন, ‘উনি ঠিকই বলেছেন। জনাদেশ ওই সরকারের পক্ষে ছিল না। ভোটাররাও মোদিকে গ্রহণ করেননি।’ লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর তৃণমূল কংগ্রেস চেয়েছিল বিজেপিকে সরকার গড়তে না দিয়ে কংগ্রেস সরকার গড়তে উদ্যোগী হোক। কিন্তু সে সময় সরকার গড়তে বাড়তি সমর্থন ‘ইন্ডিয়া’র পক্ষে তৎক্ষণাৎ জোটানো সম্ভব ছিল না। কংগ্রেস সভাপতি তখন উপযুক্ত সময়ের জন্য অপেক্ষা করার কথা বলেছিলেন।
সেই বৈঠকের পর তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলীয় সাংসদদের এক সভায় বলেছিলেন, ‘আগামী দিনে সরকার গড়বে ইন্ডিয়াই। সেটা শুধু সময়ের অপেক্ষা। দল পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে চলছে।’ এবার খাড়গের মন্তব্যেও পাওয়া গেল সেই প্রতীক্ষারই ইঙ্গিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thirteen + 10 =