হুগলি: হুগলি আরামবাগ মহকুমার খানাকুলের অরুন্ডা গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে আগুন। দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন। উত্তেজনা এলাকায়। কিভাবে আগুন লাগল তা এখনো স্পষ্ট নয়। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, এদিন সকালে পঞ্চায়েত ভবনের তৃতীয় তল থেকে প্রথম আগুন দেখতে পান স্থানীয়রা। ক্রমে ক্রমে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে দমকলের দুটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করে তারা। দুটো আগুন ছড়িয়ে পড়ায় এলাকার মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। ™ঞ্চায়েতে অফিসে আগুন লাগার ঘটনা নিয়ে বিরোধীরা তীব্র কটাক্ষ করে। বিজেপি থেকে শুরু করে সিপিআইএম নেতৃত্বের অভিযোগ সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন তাই কোটি কোটি টাকা দুর্নীতি ঢাকতে পঞ্চায়েত অফিসে আগুন লাগানো হচ্ছে। তৃণমূল ষড়যন্ত্র করে সাধারণ মানুষের টাকা আত্মসাৎ করে পঞ্চায়েত অফিসে আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ তুলছেন বিরোধীরা। তাদের আরো অভিযোগ ১০০ দিনের কাজ থেকে শুরু করে আবাস যোজনায় বাড়ি নির্মাণ, ড্রেন ও রাস্তা নির্মাণ, নদী বাঁধ নির্মাণ, প্রভৃতি উন্নয়নমূলক কাজে দুর্নীতি করা হয়েছে। সেই দুর্নীতি যাতে প্রকাশ পেয়ে না যায়, সেই জন্য পঞ্চায়েত অফিসে আগুন লাগানো হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন তারা। এই বিষয়ে আরামবাগের সিপিআইএম নেতা পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কোটি কোটি টাকা চুরি করা হয়েছে। সেই চুরি ঢাকতেই পঞ্চায়েতে আগুন লাগানো হয়েছে। বিজেপি নেতা বিমান ঘোষ বলেন, পঞ্চায়েত অফিসে দুর্নীতির কাগজ রয়েছে। সেই কাগজ যদি ধরা পড়ে যায় তাহলে তৃণমূলের দূর্নীতি বেরিয়ে পড়বে। তাছাড়া বোম, বন্দুকের আস্তানা হয়েছে, ওই পঞ্চায়েত অফিসে। গা ঢাকতে আগুন লাগানো হয়েছে। তদন্ত করলে প্রকৃত তথ্য বের হবে।
এদিন পঞ্চায়েতে আগুন লাগায় কয়েক হাজার মানুষ জড়ো হয়। পাশাপাশি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন খানাকুল এক নম্বর ব্লকের বিডিও শান্তনু চক্রবর্তী, স্থানীয় প্রধান ও উপ প্রধান। এই বিষয়ে স্থানীয় প্রধানের দাবি, রাতে ঝড় বৃষ্টি হয়েছিল। তাই বজ্রপাত থেকে কোন কারনেও হয়তো আগুন লেগে যেতে পারে। এই বিষয়ে প্রধান রিঙ্কু বর বলেন, এলাকার মানুষ প্রথম জানায় আগুন লেগেছে বলে। রাতে ঝড় বৃষ্টি হয়েছে বজ্রপাত থেকে আগুন লাগতে পারে। বিরোধীরা বিরোধিতা করার জন্য এইরকম বলছে। ওদের কুৎসা রটানই কাজ। অপরদিকে খানাকুল ১ নম্বর ব্লকের বিডিও শান্তনু চক্রবর্তী বলেন, সকাল সাতটা নাগাদ খবর পাই। আরামবাগ মহকুমা শাসক ও পুলিশকে জানানো হয়। তারপরে দমকল ও পুলিশ ঘটনাস্থলে চলে আসে। আগুন নিভানোর কাজ চলছে। পঞ্চায়েত অফিসের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে প্রাথমিক রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। বিরোধীদের করা অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করে খানাকুলের অরুণদা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সীমন্ত হামবীর বলেন, বিরোধী বলে এখানে কিছু নেই। যেই বাম, সেই রাম। ওরা দুর্ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করছে। এটা সম্পূর্ণ ওদের মিথ্যা অভিযোগ ও ভিত্তিহীন কথাবার্তা। সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন বলে হাওয়া গরম করতেই এই ধরনের অভিযোগ করছে। সবমিলিয়ে পঞ্চায়েত ভোটের আগে খানাকুলের অরুণদা পঞ্চায়েত অফিসে আগুন লাগার ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলে দাবি বিষয়টি নিয়ে সম্পূর্ণভাবে তদন্ত করা উচিত। কেননা উন্নয়নের টাকার হিসাব থাকে পঞ্চায়েত অফিসে। যদি সেই উন্নয়নের টাকার নয়ছয় হয় অথবা সেই কারণে আগুন লাগে, সেই বিষয়ে সঠিক তথ্য পাওয়ার জন্য পূর্ণাঙ্গ তদন্তের প্রয়োজন বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞমহল।